পরজীবী কি? পরজীবী কাকে বলে? পরজীবী কত প্রকার ও কি কি?
সূচনাঃ পরজীবী হচ্ছে এক ধরনের জীব, বলতে পারি অতি ক্ষুদ্র জীব। এ জীব অন্য কোন এক জীবের মধ্যে বসবাস করে জীবন ধারণ করে। কিছু পরজীবী আছে এমন যারা অতি স্বল্প সময়ের জন্য অন্য প্রাণীর দেহে বসবাস করে, আবার কিছু পরজীবী আছে যারা দীর্ঘ সময়ের জন্য বসবাস করে। পরজীবী তার নিজের স্বাস্থ্য রক্ষার্থে যে প্রাণীর দেহে বসবাস করে তার স্বাস্থ্য হানির কারণও বটে। পরজীবী একটি প্রাণীর জন্য কখনো সুখকর নয় বরঞ্চ অনেক অসুবিধার কারণ।
আলোচনার বিষয়বস্তুঃ
- পরজীবী প্রাণীর কোথায় থাকে।
- পরজীবী কি।
- পরজীবী কাকে বলে।
- পরজীবী কত প্রকার ও কি কি।
- বাইরের পরজীবী গুলো কি।
- অন্ত পরজীবী গুলো কি।
- কৃমি কি।
- কৃমি কত প্রকার ও কি কি।
- মানুষের শরীরে বসবাস করা ভয়ংকর কিছু পরজীবী।
- যেভাবে আক্রান্ত হতে পারে একজন মানুষ।
পরজীবী প্রাণীর কোথায় থাকেঃ পরজীবী অতি ক্ষুদ্র এক প্রকার প্রাণী। এই প্রাণী ভিন্ন প্রাণীর
( ভিতরে এবং বাহিরে ) বসাবাস করে। এবং এই প্রাণী পর নিবর্ভরশিল প্রাণী।
পরজীবী কিঃ এটি হচ্ছে এক ধরনের ক্ষুদ্র জীব। যা অন্য তার থেকে বড় এমন প্রাণীর দেহে বসবাস করে এবং খাদ্য পুষ্টি শোষণ করে। এটি একটি পর নির্ভরশীল প্রাণী যা অন্যের ওপর সর্বদা নির্ভরশীল।
পরজীবী কাকে বলেঃ যে সকল জীব তার থেকে বড় অন্য জীবের দেহে বসবাস করে নিজের খাদ্য ও পুষ্টির সম্পূর্ণ বা আংশিক চাহিদা পূরণ করে থাকে এবং আশ্রয়দাতা প্রাণীর শরীরের স্বাস্থ্য হানি করে নিজ স্বার্থ বা স্বাস্থ্য বজায় রাখে এমন ক্ষুদ্র জীবকেই আমরা পরজীবী হিসাবে জানি। পরজীবী সর্বদা অন্যের উপর নির্ভরশীল অর্থাৎ আশ্রয়দাতা প্রাণীর উপর নির্ভরশীল।
পরজীবী কত প্রকার ও কি কিঃ পরজীবী প্রধানত দুই প্রকার- যথা
১)
অন্ত পরজীবী।
২)
বহি পরজীবী।
অন্ত পরজীবী কাকে বলেঃ যে সকল ক্ষুদ্র প্রাণী অন্য প্রাণীর দেহের ভিতর অংশে বসবাস করে খাদ্য ও পুষ্টি আহরণ করে তাকে অন্ত পরজীবী বলে। অন্ত পরজীবীর কয়েকটি উদাহরণ- ম্যালেরিয়া জীবাণু,ভাইরাস,ব্যাকটেরিয়া, কৃমি ইত্যাদি।
বহি পরজীবী কাকে বলেঃ যে সকল ক্ষুদ্র প্রাণী বন্যপ্রাণীর দেহের বাইরে অংশে বসবাস করে খাদ্য ও পুষ্টি আহরণ করে আশ্রয়দাতা প্রাণীর দেহের স্বাস্থ্য হানি করে তাকে বহিঃ পরজীবী বলে। বহি পরজীবীর কয়েকটি উদাহরণ- উকুন, আঠালি, মাইনস,
জোঁক, মশা,কৃমি,মাছি ইত্যাদি।
কৃমি কিঃ কৃমি হচ্ছে এক ধরনের পরজীবী, যা প্রাণীর দেহে বসবাস করে। এবং কৃমিতে আক্রন্ত প্রাণীর সাস্থ দিন দিন অবনত সাধিত হতে থাকে। কৃমির আক্রান্ত প্রানী কৃমি মুক্ত না হলে ক্রমন্বয়ে বিভিন্ন রোগে আক্রন্ত হতেই থাকে, ফলে সময়ের ব্যাবধানে মারাক্তক সব রোগের কারনে প্রনী মৃত্যু পজন্ত হতে পারে।
কৃমি কত প্রকার ও কি কিঃ
কৃমি প্রধানত দুই প্রকার: যথা-
১)
অন্ত কৃমি।
২)
বহি কৃমি।
অন্ত কৃমি- যে সকল কৃমি প্রাণীর দেহের ভিতর বসবাস করে খাদ্য পুষ্টি আহরণ করে তাকে অন্ত কৃমি বলে। অন্ত কৃমির মধ্যে যে সকল কৃমি পাওয়া যায়:-
ক) গোল কৃমি।
খ) ফিতা কৃমি।
গ) কলিজা কৃমি। প্রভিাত….
বহি কৃমি- যে সকল কৃমি প্রাণীর দেহের বাইরে বসবাস করে খাদ্য পুষ্টি আহরণ করে তাকে বহি কৃমি বলে। বহি কৃমির মধ্যে যে সকল কৃমি পাওয়া যায়-
ক) চামড়া কৃমি।
খ) চক্ষ কৃমি। প্রভিতি…..
মানুষের শরীরে বসবাস করা ভয়ংকর কিছু পরজীবীঃ
ক) প্লাজমোডিয়াম।
খ) ফিতা কৃমি।
গ) ফাইলেরিয়াল কৃমি।
ঘ) স্ক্যাবিস মাইট।
যেভাবে আক্রান্ত হতে পারে একজন মানুষঃ
প্লাজমোডিয়াম:- এটি একটি ভয়ংকর পরজীবী যা মানুষের দেহে মশার মাধ্যমে বংশ বৃদ্ধি হয়ে থাকে। মশার কামড়ের ফলে রক্তের সাথে এর লালা মিশে যায় যার ফলে প্লাজমোডিয়াম পরজীবী মানুষের শরীরে রক্তের সাথে মিশে বিভিন্ন চক্র সম্পাদনের মাধ্যমে এর বংশবৃদ্ধি করতে থাকে। যার ফলে ধ্বংস হয়ে যায় শরীরের রক্ত কণিকা এতে করে দেখা যায় মানুষের শরীরে রক্তশূন্যতা।
ফিতা কৃমি:- এই কৃমি বা পরজীবী মানুষের দেহে খাবারের মাধ্যমে পুষ্টি গ্রহণ করে, যার ফলশ্রুতিতে মানুষের দেহে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিতে পারে। যার কারণে মানুষ কে অনেক রোগা দেখা যায়। অনেক সময় দেখা যায় এই কৃমি অনেক বড় আকার ধারণ করে এবং পেটের মধ্যে অনেক জ্বালা যন্ত্রণা বমি বমি ভাব অরুচি খুদা মন্দা লক্ষ্য করা যায়।
অনেক ক্ষেত্রে এই কৃমির মানুষের শরীরে ডিম ছড়িয়ে দেয় যার ফলে বিভিন্ন ধরনের এলার্জি, চুলকানি, শ্বাসকষ্ট এসব রোগে ভুগতে থাকে। অনেক সময় এই কৃমি মানুষের মস্তিষ্কে এবং স্নায়ু উপসর্গ হিসেবে মাথাব্যথা সৃষ্টি করে। মূলত দূষিত পানি হতে এবং ভালোভাবে সিদ্ধ না করা বিভিন্ন খাবার হতে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এক ধরনের শামুক থাকে যার লার্ভা থেকেও অনেক সময় ফিতা কৃমি আক্রান্ত হতে পারে।
ফাইলেরিয়াল কৃমি:- বিভিন্ন সময় মশার কামড়ে এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে, দূষিত পানির মাধ্যমে এই কৃমি ছড়ায়, স্যাতসেতে জায়গা হতে এই কৃমির আক্রান্ত হতে পারে।
স্ক্যাবিস মাইট:- এটি একটি ছোঁয়াচে পরজীবী। আক্রান্ত পশু অন্য কোন পশুর সংস্পর্শে এলে এই পরজীবী উক্ত প্রাণীর মধ্যেও বাসা বাধার সক্ষমতা রাখে।
উপসংহারঃ একটি প্রাণীকে পরজীবীর হাতে রক্ষা করার জন্য বেশ কিছু করণীয় আছে, যা লক্ষ্য করে রাখলে এই পরজীবের হাত হতে রক্ষা পাওয়া যায়। সে বিষয় নিয়ে পরে একদিন অন্য কোন আর্টিকেলে আপনাদেরকে ইনশাল্লাহ জানিয়ে দেয়ার চেষ্টা করব। তবে মনে রাখবেন পরজীবীর হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য বাজারে বিভিন্ন ধরনের ঔষধ পাওয়া যায় সেগুলো ব্যবহার করা যায়।
Bestwold নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url