বায়ো গ্যাস প্লান্ট কি? বায়ো গ্যাস প্লান্ট কিভাবে তৈরি করতে হয়
সুপ্রিয় পাঠক বন্ধু, আপনি কি বায়োগ্যাস প্লান্ট সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন! তাহলে আপনি সঠিক জায়গাতে এসেছেন, আজ আমরা এই আর্টিকালের মাধ্যমে আপনাদেরকে জানাবো কিভাবে বায়োগ্যাস প্লান্ট এর কাজ হয়। আপনি যদি বায়োগ্যাস প্লান্ট সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে নিবেন। ইনশাল্লাহ আশা করা যায় এটি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়লে বায়োগ্যাস প্লান্ট সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট ধারণা পেয়ে যাবেন।
বায়োগ্যাস প্লান্ট হচ্ছে এক ধরনের জৈব বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মেশিন। যার মাধ্যমে জৈব বর্জ্য গুলোর সঠিক ব্যবহার করে কয়েক ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়। আমরা পর্যায়ক্রমে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব বায়োগ্যাস প্লান্ট সম্পর্কে এজন্য আপনাকে আমাদের পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ে নিতে হবে।
সূচনা
বায়োগ্যাস প্লান্ট হচ্ছে এক ধরনের নির্দিষ্ট ডাইজেশন প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে জৈব বর্জ্য পদার্থগুলো ডাইজেশন করে উৎপাদন করা হয় মিথেন গ্যাস ,কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও জৈব সার। যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক সাশ্রয় ও সুযোগ সুবিধা করে থাকে। একটি বায়ো গ্যাস প্লান্ট এর মাধ্যমে আমরা বেশ কিছু সুযোগ সুবিধা নিয়ে থাকি। যেমন ধরুন-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, তাপ শক্তি, জ্বালানি শক্তি, এবং উৎপাদন শক্তি এ সকল সুবিধা নিতে পারি।
আর্টিকল এর বিষয়বস্তু
- বায়ো গ্যাস প্লান্ট কি।
- বায়োগ্যাস প্লান্ট হতে উৎপাদিত প্রধান গ্যাস কোনটি।
- বায়ো গ্যাস প্লান্ট কিভাবে তৈরি করতে হয়।
- বায়োগ্যাস প্লান্ট এর কাঁচামাল গুলো কি।
- বায়ো গ্যাস প্লান্ট স্থাপন খরচ।
- বায়ো গ্যাস প্লান্ট স্থাপনের উদ্দেশ্য।
- বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপনের শর্ত।
বায়ো গ্যাস প্লান্ট কি
বায়ো গ্যাস প্লান্ট হচ্ছে এক ধরনের মেশিন! যাহার মাধ্যমে ম্যানুয়ালি এবং ইন্ডাস্ট্রিয়ালিজ ড্রাস্ট অর্থাৎ দৈনন্দিন জীবনের ব্যবহারিত ওয়েস্টেজ এবং ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ এর অব্যবহারিত কাঁচামাল থেকে উৎপাদিত্য বর্জ্য যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাতকরণ করে মিথেন গ্যাস, কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও জৈব সার এর উৎপাদন করা হয় সেই প্রক্রিয়া করণ করার মাধ্যমটিকে বায়োগ্যাস প্লান্ট বলা হয়।
অন্যভাবে বলা যায় যে সকল জৈব বর্জ্য পদার্থ একটি এনআবিক ডাইজেশন এর মাধ্যমে উৎপাদন কৃত মিথেন গ্যাস ও জৈব সার উৎপাদনের প্রক্রিয়াকেই যে মাধ্যমে করা হয় তাহাই মূলত বায়োগ্যাস প্লান্ট।
বায়োগ্যাস প্লান্ট হতে উৎপাদিত প্রধান গ্যাস কোনটি
অত্যন্ত সহজ ভাবে আমরা বলতে পারি যে বায়ো গ্যাস প্লান্ট হতে উৎপাদিত্য প্রধান পণ্য বা গ্যাস হচ্ছে মিথেন গ্যাস। এছাড়াও আমরা বায়ো গ্যাস প্লান্ট হতে যে সকল সুবিধা গুলো পেয়ে থাকি তা হচ্ছে জৈব সার, কার্বন-ডাই-অক্সাইড।
এ সকল উৎপাদিত মেটেরিয়ালস হতে আমরা রান্নাবান্নার কাজে জন্য, রাত্রিকালীন ঘরবাড়ী আলো করার জন্য, এবং উৎপাদিত জৈব সার কৃষি জমিতে কাজে লাগানোর জন্য ভালো সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকি।
বায়ো গ্যাস প্লান্ট কিভাবে তৈরি করতে হয়
বায়োগ্যাস প্লান্ট হচ্ছে ভূগর্ভস্থ একটি ডাইজেশন প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে অব্যবহারিত জৈব পদার্থ বা বর্জ্য একটি সুনির্দৃষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ড্রাইজেশন করা হয়। এটা একটি নির্দিষ্ট পরিমাপে (যার যেরকম প্রয়োজন) সে অনুপাতে মাটির নিচে গর্ত করতে হয় এবং সেই গর্তটি রাজমিস্ত্রির মাধ্যমে একটু গোলাকৃতির করে গেথে নিতে হয়,উপরের ছাদটি গম্বুজের মত হয়ে থাকে।
এবং এমন ভাবে এটি তৈরি করতে হবে যাতে করে অক্সিজেন প্রবেশ করতে না পারে, আর এভাবে তৈরি করা জিনিসটাকে আমরা বায়োগ্যাস প্ল্যান এর টাংকি হিসাবে জেনে থাকি। এছাড়াও বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির বায়োগ্যাস প্লান্ট রেডিমেড প্লাস্টিকের তৈরি ট্রাঙ্ককি পাওয়া যাচ্ছে। যার মাধ্যমে অত্যন্ত সহজ ভাবে এবং স্বল্প মূল্যে বায়োগ্যাস প্লান্ট তৈরির কাজটি সম্পন্ন করা হচ্ছে।
বায়োগ্যাস প্লান্ট এর কাঁচামাল গুলো কি
- বায়োগ্যাস প্লান্ট এ উৎপাদিত মিথেন গ্যাস, কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও জৈব সার উৎপাদনের জন্য যে সকল কাঁচামালের প্রয়োজন তা হচ্ছে-
- বাসা বাড়িতে ব্যবহারিত বিভিন্ন ধরনের জৈব বর্জ্য। যেমন- ডিমের খোসা, বিভিন্ন সবজির খোসা, এবং পচে যাওয়া বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য।
- ফুড ইন্ডাস্ট্রিয়াল এর অব্যবহারিত জৈব বর্জ্য। যেমন- নষ্ট হয়ে যাওয়া এবং পচে যাওয়া বিভিন্ন ধরনের র-মেটেরিয়ালস।
- এগ্রিকালচার ভিত্তিক ব্যবহারিত বর্জ্য। যেমন- পশু পাখির বিষ্ঠা, কৃষি জমিতে উৎপাদিত বর্জ্য।
বায়ো গ্যাস প্লান্ট স্থাপন খরচ
বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন খরচ এর নির্দিষ্ট কোন পরিমাপ নেই। এটি চাহিদা এবং প্রয়োজন এর অনুপাতে এবং সাইজ অনুপাতে এর খরচ কম বেশি হয়ে থাকে। বর্তমান বাজার মূল্য সর্বনিম্ন ২০ হাজার থেকে শুরু করে ঊর্ধ্বে এর কোন লিমিট নেই।
বায়ো গ্যাস প্লান্ট স্থাপনের উদ্দেশ্য
স্থাপনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রাকৃতিক গ্যাস এর পরিবর্তে কৃত্রিম গ্যাস প্রাপ্তি, জায়গা জমির উর্বরতা বৃদ্ধির জন্য জৈব সার এর যোগান, এবং সর্বোপরি অব্যবহারিত জৈব বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা।
- বিভিন্ন খামারে অর্থাৎ গবাদিপশুর বর্জ্য, কৃষি বর্জ্য, এবং ইন্ডাস্ট্রিয়ালস জৈব বর্জ্য এর সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিবেশ দূষণের হাত থেকে রক্ষা পাশাপাশি শক্তি উৎপাদন।
- বায়ো গ্যাস হতে উৎপাদিত্য জৈব পদার্থ বা সার ব্যবহার করে কৃষি জমির উর্বরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করা।
- ক্ষুদ্র পরিসরে পারিবারিক ও বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কৃত্রিম শক্তি উৎপাদন নিশ্চিত করা।
বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপনের শর্ত
- এটি নিজেস্ব জায়গায় হতে হবে।
- সর্বনিম্ন কুড়ি শতাংশ জায়গার প্রয়োজন হবে।
- বায়োগ্যাস প্লান্টটি অবশ্যই প্রকল্পের সন্নিকটে স্থাপন করতে হবে।
- প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সরবরাহ করতে হবে। যেমন-গোবর, মুরগির লিটার, প্রভৃতি।
উপসংহার
একটি বায়োগ্যাস প্লান্ট এর মাধ্যমে আমরা পরিবেশ দূষণের হাত থেকে এবং আর্থিক অনেক সুযোগ-সুবিধা পেয়েছি অতএব প্রতিটি মানুষের উচিত হবে তার সামর্থ্য অনুযায়ী একটি বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন করা। কারণ বর্তমান সময়ে অনেক কোম্পানি স্বল্প মূল্যে এবং স্বল্প জায়গায় বায়ো গ্যাস প্লান্ট স্থাপন করার ব্যবস্থা করছে। এতে করে আমাদের আর্থিক অনেক সুযোগ সুবিধা পেয়ে যাবো।
লেখকের কথা
আমরা বলতে পারি, বায়োগ্যাস প্লান্ট হচ্ছে একটি পরিবেশবান্ধব এবং আর্থিক সাশ্রয় এর মেশিন। তাই আমি বলব বর্তমান সময়ে প্রাকৃতিক গ্যাসের এবং বিদ্যুৎ ঘাটতি রোধে প্রতিটি মানুষের তার সমর্থ্য অনুযায়ী একটি করে বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন কর প্রয়োজন। পরিশেষে বলবো আমাদের এই আর্টিকেলটি থেকে আপনি যদি সামান্যতার উপকার পেয়ে থাকেন তাহলে আপনাদের পরিচিতজনদের মধ্যে এটি শেয়ার করে দিবেন যাতে করে তারা বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারে।
আমাদের এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে জানাই আমাদের পক্ষ হতে আন্তরিক
Bestwold নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url