OrdinaryITPostAd

২০২৪ সাল হতে কোন ধরনের জমি খাস করা হচ্ছে

আসসালামু আলাইকুম! সু-প্রিয় পাঠক বিন্দু আজ আমরা এমন একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করব যা সাম্প্রতিক ডিসিম মহোদয় কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ২০২৪ সাল হতে কোন ধরনের জমি খাস করা হচ্ছে এ বিষয়ে আজকের আলোচনা। তাহলে চলুন দেখে আসা যাক, এবং আপনার জমি টি কি এর অন্তর্ভুক্ত কি না তা জেনে নিন এবং সে বিষয়ে আপনি এখন হতেই সাবধান হয়ে যান।
২০২৪ সাল হতে কোন ধরনের জমি খাস করা হচ্ছে
সাম্প্রতি ভূমি আইন পাশ হয়েছে! যা ভূমি প্রতিকার ও প্রতিরোধ আইন নামে চিহ্নিত হয়েছে। এর পাশাপাশি আরো কয়েকটি আইন পাস হয়েছে, যেমন হাট বাজার স্থাপন আইন, কর আইন ইত্যাদি। এর বাস্তব প্রয়োগ করার জন্য অলরেডি ডিসি মহোদয়ের নিকট ক্ষমতা প্রেরণ করা হয়েছে। যা ২০২৪ সাল হতে পর্যায়ক্রমে কার্য পরিচালনা করা হবে।

ভূমিকা

আপনার জমিটি যদি নিম্নে বর্ণিত সম্পত্তির মধ্যে হয়ে থাকে তাহলে আপনার মন মানসিকতা এখন হতেই শক্ত রাখুন, কারণ নিচে যে সকল সম্পত্তির বর্ণনা এখন আমি করব সে সকল সম্পত্তি অচিরেই অর্থাৎ ২০২৪ সাল হতেই সরকার খাস জমির অন্তর্ভুক্ত করে নিবেন এর জন্য ডিসি মহোদয়ের নিকট ইতিমধ্যেই নির্দেশনা প্রদান করা হয়ে গেছে।

যে সকল জমি ২০২৪ সাল হতে খাস জমির অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে

  • ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে মালিকানা জাহির করা সম্পত্তি।
  • অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের জন্য ব্যবহারিত সম্পত্তি।
  • অবৈধভাবে বাজার স্থাপন বা নাম জহির করা সম্পত্তি।
  • তিন বছরের অধিক খাজনা পরিষদ না করার সম্পত্তি।
  • ৬০ বিঘার বেশি জমি এক-খানায় অন্তর্ভুক্ত সম্পত্তি।
  • পরিত্যক্ত জমি দখলে নিয়ে বিক্রয় করা সম্পত্তি।
  • সরকারি বা বেসরকারি মহলের জমি দখল করে হস্তান্তর করা সম্পত্তি।
  • সিকস্থি এর অন্তর্ভুক্ত সম্পত্তি।

চলুন এ পর্যায়ে আমরা উপরোক্ত বিষয়গুলোর সম্পর্কে বিস্তারিত একটি ধারণা অর্জন করে নিই। এবং এখন হতেই উক্ত জমি ক্রয় বিক্রয় হতে বিরত থাকি, তা নাহলে আপনার কষ্ট-অর্জিত অর্থের অপব্যবহার হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকেন।

ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে মালিকানা জাহির করা সম্পত্তি

এখন আপনি নিশ্চয়ই ভাবতেছেন ভুয়া কাগজপত্র আবার কিভাবে করে উক্ত জমি হস্তান্তর করবে বা বিক্রয় করবে? চলনে বিষয়ে একটু আলোচনা করি-

এখানে প্রকৃত ভূমি মালিকের অনুপস্থিতিতে কোন ব্যক্তি যদি তার প্রাপ্ত সম্পত্তিকে নিজের নামে কাগজপত্র করে নিয়ে তা বিক্রয় করে বাহ হস্তান্তর করে। প্রকৃত মালিকের সম্পত্তি কিভাবে নিজের নামে করে নিবে এ বিষয়ে একটি ধারণা দিই।

মনে করুন আপনার কোন এক ভাই অথবা বোন বা নিকট আত্মীয় বিদেশে অবস্থান করছে এখন তার জমিটি তার অনুপস্থিতিতে আপনাদের নামে বা আপনার নামে কাগজপত্র তৈরি করে নিলেন। অথবা আমাদের ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যে সকল হিন্দু দেশ পরিত্যাগ করেছিল তাদের ত্যক্ত সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করে কাগজপত্র তৈরি করে উক্ত জমি জায়গা বিক্রি বা হস্তান্তর করা। 

এ সকল ধরনের সম্পত্তি মূলত ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে মালিক। যারা এ সকল পন্থা অবলম্বন করে, কোন সম্পত্তি ভোগ দখল বা হস্তান্তর ক্রয় বিক্রয় করছেন তারা মানসিকভাবে প্রস্তুত হয়ে যান, উক্ত সম্পত্তি গুলো খাস করা হচ্ছে।

অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের জন্য ব্যবহারিত সম্পত্তি

অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের জন্য ব্যবহার করতে দেওয়া বা ইজারা দেওয়া সম্পত্তি গুলো খাস খতিয়ান এর অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। বর্তমানে অবৈধভাবে ভালো উত্তোলন করা একটি গৃহীত বা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। আপনি তা জেনেও আপনার কষ্ট অর্জিত জমিটুকু যদি উক্ত কাজে ব্যবহারের জন্য প্রদান করে থাকেন তাহলে আপনার জমিটুকু খাস করা হচ্ছে। 

কারণ বালু উত্তোলনের ফলে যে এলাকায় ভালো উত্তোলন করা হয় তার ভূগর্ভ খনন করার ফলে একটি ফাঁপা জায়গার সৃষ্টি হয় যার ফলে ভয়াবহ ভূমিকম্পের কবলে পড়ে, এছাড়া যে স্থানে বাল উত্তোলন করা হয় সেই সকল স্থানে অনেক ধরনের জটিলতা পরিলক্ষিত হয় যেমন অধিক পরিমাণে ঘর বাড়ি ময়লা হওয়া, পরিবেশের ভারসাম্য অরক্ষিত হওয়া ইত্যাদি। 

অতএব আপনার জমিটি যদি এরকম কোন কাজে ব্যবহৃত হয় তাহলে আপনি সতর্ক হয়ে যান অথবা মনোবল দৃঢ় করুন আপনার জমিটুকু খাস এর অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে।

অবৈধভাবে বাজার স্থাপন বা নাম জহির করা সম্পত্তি

বর্তমানে বা সাম্প্রতি! হাট বাজার স্থাপন আইনটি পাস হয়েছে। অতএব এখন হতে কোন হাট-বাজার স্থাপন করতে হলে বা কোন স্থানের নাম নির্ধারণ করতে হলে, যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট হতে অনুমতি সাপেক্ষে তা করতে হবে। তা না হলে উক্ত সম্পত্তিটুকু খাস জমি এর অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। 

এছাড়াও বর্তমানে অবৈধভাবে যে সকল সম্পত্তির উপরে অনুমতি ব্যতীত হট-বাজার স্থাপন করা হয়েছে বা নাম পরিবর্তন করা হয়েছে সে সকল স্থানের বিরুদ্ধে যথাযথ আইন প্রয়োগ করা হবে। অতএব আপনি সাবধান হয়ে যান আপনার জমিটি যদি এরকম অবস্থানে হয়ে থাকে তাহলে উক্ত সম্পত্তিটুকু খাস করা হচ্ছে।

তিন বছরের অধিক খাজনা পরিষদ না করার সম্পত্তি

কোন জমির যদি অনধিক তিন বছর খাজনা পরিষদ না করেন তাহলে উক্ত জমিটি সরকার খাস জমির অন্তর্ভুক্ত করছে। অতএব আপনার কষ্ট অর্জিত সম্পত্তিটুকু যদি এখন নো খারিজ না করে থাকেন তাহলে অতিসত্বর উক্ত জমিটি খারিজ করে নেন এবং নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করুন। তা না হলে হিতে বিপরীত হতে পারে, এবং আপনি জমিটি হারাতেও পারেন। 

অনেক সময় দেখা যায়, উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি, অথবা ক্রয় করেছেন কিন্তু অবহেলা জমিটি খারিজ করেননি যার ফলে খাজনা পরিষদ করা হয়নি, অথবা আপনি বিদেশে থাকেন এর কারণেও আপনার জমিটি খারিজ করেননি এবং খাজনা ও নিয়মিত পরিশোধ করেন না। 

বিষয়গুলো যদি এরকম হয়ে থাকে তাহলে দেরি না করে এখনই যত দ্রুত সম্ভব আপনার কষ্ট অর্জিত সম্পত্তিটুকু নিজ নামে খারিজ করে ভূমি উন্নয়ন কর পরিষদ করুন। যদি ভূমি উন্নয়ন কর পরিষদ না করেন আর সেটা যদি তিন বছরের অধিক হয়ে যায় তাহলে উক্ত জমি ২০২৪ সাল হতে খাস জমির অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।

৬০ বিঘার বেশি জমি এক-খানায় অন্তর্ভুক্ত সম্পত্তি

সাম্প্রতি পাস হওয়া আইন! ভূমি প্রতিকার ও প্রতিরোধ আইনে বলা হয়েছে যদি কোন ব্যক্তি বা পরিবারের নামে কৃষি জমি ৬০ বিঘার ঊর্ধ্বে হয় তাহলে ৬০ বিঘা বাদ রেখে ঊর্ধ্ব জমিটুকু খাস জমির অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। এখন আপনি বলতে পারেন, আমার একক নামে তো আর ৬০ বিঘা জমি ক্রয় করিনি বা এমন হতে পারে ২০ বিঘা জমি আমি ক্রয় করেছি বাকি জমি ওয়ারিশ সূত্রে, পেয়ে ৬০ বিঘার উপরে হয়ে গেছে এমনটি হলেও কি আমার জমি খাসের অন্তর্ভুক্ত হবে? 

জিহা এমনটি হলেও আপনার ঊর্ধ্ব জমেটুকু খাস জমির অন্তর্ভুক্ত হবে। তাহলে এর সমাধান কি তাহলে এর সমাধান হচ্ছে যদি এরকম পরিস্থিতি হয়ে থাকে তাহলে অতি দ্রুত আপনি একখানা হতে পৃথক হয়ে যান অর্থাৎ আপনার ছেলে মেয়ে যদি থাকে তাহলে তাদেরকে আলাদা করে দিন আলাদা পরিবার গঠন করে ফেলুন।

এবং তাদের নামে উক্ত সম্পত্তি বন্টন করে দেন বা হস্তান্তর করে দেন অথবা তা না করতে চাইলে উর্ধ্ব জমিটুকুবিক্রয় করে ফেলুন। তবে যদি আপনার জমিটুকু কোন প্রজেক্ট বাণিজ্যিক কাজের জন্য ব্যবহার হয়ে থাকে সেটা ভিন্ন ব্যাপার। তবে আবাদি বা কৃষি জমি একখানায় অন্তর্ভুক্ত ৬০ বিঘার উর্ধ্বে হতে পারবেনা।

পরিত্যক্ত জমি দখলে নিয়ে বিক্রয় করা সম্পত্তি

পরিত্যক্ত সম্পত্তি সে সকল সম্পত্তিকে বোঝায়, যে সকল সম্পত্তির কোন ওয়ারিস থাকেনা। অথবা এমনটিও হতে পারে সরকারের বিভিন্ন ডোবা,নালা অথবা কোন জমি কোন ব্যক্তি ছেড়ে একেবারে অন্যত্র চলে গেছে এরকম কোন সম্পত্তি যদি আপনি দখলে নিয়ে বিক্রয় করেন সেই সকল সম্পত্তিগুলো বর্তমানে খাস করা হচ্ছে।

সরকারি বা বেসরকারি মহলের জমি দখল করে হস্তান্তর করা সম্পত্তি

সরকারি বা সাহিত্য শাসিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জমি রয়েছে যেগুলো বহু মানুষ দখল করে হস্তান্তর করে। যেমনটি বাংলাদেশ রেলওয়ের জমি, অবদার জমি, নৌ মন্ত্রণালয়ের জমি ইত্যাদি সকল জমি হস্তান্তর করা আইনত দণ্ডনীয়। উক্ত জমি কেউ যদি হস্তান্তর করে থাকেন বা ক্রয় বিক্রয় করে থাকেন তাহলে উক্ত জমিনেও ছেড়ে দেওয়ার মন-মানসিকতা গ্রহণ করুন।

সিকস্থি এর অন্তর্ভুক্ত সম্পত্তি

সিকস্থি সম্পত্তির সকল জমিকে ধরা হয় যে সকল জমি নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায় বা নদীর ভাঙ্গনে ভেঙ্গে যায়। আপনার নিজ যোথ জায়গা ও যদি নদীর ভাঙ্গনে নদী গর্ভে চলে যায় তাহলে উক্ত সম্পত্তিটি আর আপনার থাকেনা সেটি সরকারের জমি হয়ে যায় বা খাস জমিতে পরিণত হয়। 

উক্ত জমি টি যদি আবারও চর জাগে তাহলেও উত্তেজনাটি আর আপনার থাকে না সেটি সরকারের খাস জমি হয়। এক্ষেত্রে আপনি যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট হতে নির্দিষ্ট মাধ্যমে আবেদন করে উক্ত জমিটি বন্দোবস্ত নিতে পারেন। এর ব্যতিক্রম হলে উক্ত জমি আপনাকে ছাড়তে হবে যা সরকারের খাস জমিনের অন্তর্ভুক্ত।

উপসংহার

উপরে বর্ণনাকৃত সম্পত্তিগুলোর মধ্যে যদি আপনার জমিটুকু পড়ে তাহলে অতি শীঘ্রই আপনার কাগজপত্র পরিষ্কার করুন বা সংশোধন করুন। তা না হলে মন মানসিকতা শক্ত রাখুন আপনার জমিটি অচিরেই খাস জমির অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে আপনি তা কোনভাবেই রক্ষা করতে পারবেন না।

লেখকের কথা

আমি আমার পাঠক বৃন্দকে বলতে চাচ্ছি আপনার কষ্টের উপার্জিত টাকা-পয়সার মাধ্যমে ক্রয় কৃত জমির কাগজপত্র সকল সময় দেখে বুঝে নেবেন, এবং তা সকল সময় আপডেট রাখবেন। বলা যায় না কখন কি হতে পারে। অতএব সচেতন থাকুন সাবধানে থাকুন।

পরিশেষে বলে যেতে চাই আমাদের এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার পরিচিত জনদের মাঝে শেয়ার করে দিন যাতে করে তারা বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারে।

শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে জানাই অসংখ্য 
ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Bestwold নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url