OrdinaryITPostAd

১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ এর ইতিহাস এবং দিবস

আসসালামু আলাইকুম! প্রিয় পাঠক বৃন্দ, আমি মোঃ মেহেদী হাসান, পরিচালক-এমএইচ ফ্যাশনে এগ্রো। আজ আপনাকে জানাতে চলেছি ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ এর ইতিহাস। আশা করছি ১৬ই ডিসেম্বর সম্পর্কে আপনি ইতিপূর্বেই অবগত রয়েছেন। তথাপি বিষয়টি সম্পর্কে আরো একবার জানার এবং পড়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আমাদের এই আর্টিকেলটির মধ্যে উক্ত বিষয়টি নিয়ে আলোকপাত করেছি।
১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ এর ইতিহাস
১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ আমরা এমনভাবে এ আর্টিকেলটিকে সাজিয়েছি যাতে করে ১৬ই ডিসেম্বর দিনটির ইতিহাস এবং এর মর্যাদা সম্পর্কে যাতে করে আপনাকে একটি পূর্ণাঙ্গ ধারণা দিতে পারি বা আপনি একটি পরিপূর্ণ ধারণা নিতে পারেন তা নিয়েই আমাদের আজকের আয়োজন।

ভূমিকা

বাংলাদেশী এবং বাঙালি জাতির জন্য ১৬ই ডিসেম্বর একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন যা ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল স্তরের মানুষের কাছে সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয়। ১৬ই ডিসেম্বর হচ্ছে আমাদের সদ্য স্বাধীনকৃত দেশের মহান বিজয় দিবস। এই দিনটিকে ঘিরে আমাদের বাঙালি জাতির মধ্যে এক আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। যা আমরা সকলেই জানি।

১৬ ডিসেম্বর কি দিবস

১৬ ডিসেম্বর আমাদের বাঙালি বা বাংলাদেশীদের জন্য মহান বিজয় দিবস। প্রতি বছর ১৬ ই ডিসেম্বর তারিখে বাংলাদেশে দিনটিকে বিশেষভাবে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পালন করা হয়। ১৯৭২ সালের ২২ শে জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে দিনটিকে অর্থাৎ ১৬ ডিসেম্বর বা মহান বিজয় দিবস, জাতীয় দিবস হিসাবে উদযাপন করা হয়। সাথে সাথে দিনটিকে সরকারি ছুটির দিন ঘোষণা করা হয়।

১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে কি হয়েছিল

তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান এর স্বাধীনতা কামী বাঙালিজাতী দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয় যুদ্ধের পর, পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। তৎকালীন পাকিস্তান বাহিনীর পূর্ব অঞ্চলীয় কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজী এর নির্দেশে ভোর পাঁচটা থেকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা করে।

সেই দিন ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে যা বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, পাকিস্তানি বাহিনীর পক্ষে জেনারেল আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজী তৎকালীন যৌথ বাহিনীর প্রধান জেনারেল জগজিৎ সিং আরোরার নিকট আত্মসমর্পণ করে। সেই দিন বিকাল তিনটা ৪৫ মিনিটের সময় জেনারেল আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজী রেসকোর্স ময়দানে আসেন।

সামরিক বিধি-বিধান অনুসরণ করে বিজয়ী ও পরাজিত সেনারা শেষবারের মতো জেনারেল আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজীকে গার্ড অফ অনার জানায়। সেই দিনই বিকাল চারটার দিকে জেনারেল আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজী রেসকোর্স ময়দানে দলিলের স্বাক্ষর করে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেন বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্র।

১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ ঢাকার অবস্থা কেমন ছিল

যুদ্ধ বিধ্বস্ত ঢাকার চারিদিকে থমথমে অবস্থা, এরই মধ্যে রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ হওয়া, দলিলে স্বাক্ষর এর খবর ছড়িয়ে পড়ে ঢাকার অলিতে গলিতে। বিজয়ের উল্লাসে ফেটে পড়েন সাধারণ মানুষ। এখানে সেখানে ছোট ছোট মিছিল আকারে ঢাকার অলিতে গলিতে বের হতে থাকে সাধারন জনতা।

রাস্তার দুই দিকে মানুষের সারি, মুক্তির জয় উৎসবে আবেগে আপ্লুত হয়ে কাঁদতে থাকেন অনেকে। সন্ধ্যা থেকে সারারাত ব্যাপী ঢাকায় বিজয় উল্লাস চলল, ঐদিন বাড়িতে বাড়িতে রাতভর আলো জ্বলতে দেখা যায়। সদ্য থমথমে অবস্থা বিরাজ করা ঢাকা শহর মুক্তিযোদ্ধার শহরে পথে পথে আকাশে রাইফেলের ফাঁকা গুলিতে হচ্ছিল।

নারী-পুরুষ শিশু নির্বিচারে সকলে বেরিয়ে এসেছিল ঢাকার অলিগলিতে বিজয়ের উল্লাসে। ওই রাতে বাঙালি পরিবার সবাই জানালা খুলে রেখেছিল, ঘরে ঘরে আলো জল ছিল, রাস্তায় আলো, ঘরে আলো, বাইরে আলো, চারিদিকে শুধু আলো আর আলো।

বিজয় দিবস উদযাপন

১৯৭২ সাল হতে আজ পর্যন্ত প্রতিবছর রাষ্ট্রীয়ভাবে বাংলাদেশের বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়। এই দিনটিকে ঘিরে বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনতা চলচ্চিত্র, কবিতা, প্রবন্ধ, গান, খেলাধুলা, নাটক, আবৃতি ইত্যাদি এর আয়োজন করে থাকে। এই দিনটিকে উপলক্ষ করে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজের আয়োজন করে থাকে।

যেখানে উপস্থিত থাকেন স্বয়ং দেশের রাষ্ট্রপ্রতি এবং প্রধান মন্ত্রী। এছাড়াও এই দিবসটিকে ঘিরে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান, মতবিনিময় সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এর আয়োজন করা হয়। বিশেষত এই দিনটিতে ঢাকার সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে বিশেষ সম্মান প্রদর্শন করে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করা হয়।

উপসংহার

১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। প্রতিবছর এই দিবসটিকে আমরা এক বিশেষ দিন হিসাবে পালন করে থাকি এবং এই দিনটিকে ঘিরে নানাবিদ আয়োজন অনুষ্ঠান এর কর্মসূচি হাতে নিয়ে থাকি। এমনকি রাষ্ট্রীয়ভাবে এই দিনটিকে প্রতিটি সামরিক বেসামরিক বাহিনীদের মধ্যেও একটি আনন্দ ঘন দিনের সৃষ্টি করে।

লেখক এর কথা

“শুধু ভিক্ষা করে কখনো স্বাধীনতা লাভ করা যায় না এর জন্য প্রয়োজন হয় সংগ্রাম, সাহস, অদম্য ইচ্ছা”- “স্বাধীনতার মূল্য দিতে হয় রক্ত দিয়ে” “সালাম সালাম হাজার সালাম সকল শহীদ স্মরণে আমার হৃদয় রেখে যেতে চাই তাদের স্মৃতিচারণে”

পরিশেষে ভুলে যেতে চাই আমাদের এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনার পরিচিতজনদের মাঝে শেয়ার করে দিন।

শেষ পর্যন্ত আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Bestwold নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url