স্বশিক্ষিত এবং সুশিক্ষিত এর মধ্যে পার্থক্য কী
আসসালামু আলাইকুম! সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ, আপনাকে জানাই আমাদের ওয়েবসাইট বেস্টওয়াল্ড এ স্বাগতম। আপনি এই মুহূর্তে স্বশিক্ষিত এবং সুশিক্ষিত এর মধ্যে পার্থক্য কী এ সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আজ আমরা এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে উক্ত বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। তাই আপনাকে উক্ত বিষয়টি জানতে হলে আমাদের এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
সুশিক্ষিত এবং স্বশিক্ষিত দুইটি ভিন্ন ভিন্ন শব্দ। এবং দুইটির প্রান্ত এপিঠ ওপিঠ অর্থাৎ আমরা এভাবে বলতে পারি দুইটি শব্দের মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে দুই রকমের। একটি হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা দীক্ষায় ভরপুর অপরদিকে আরেকটি হচ্ছে নিজ প্রচেষ্টায় কোনরকম প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়া জ্ঞান আহরণ করা। মানের দিক দিয়েও দুইটির ভিন্নতা রয়েছে।
ভূমিকা
আমাদের বাংলা ভাষাভাষীদের মধ্যে এই কথাটি বহুল প্রচলিত আছে যে, কেবল শিক্ষায় সুশিক্ষিত নয় বরং তা আচার ব্যবহার এবং তা প্রয়োগের ক্ষেত্রের মাধ্যমে প্রকাশ পায় শিক্ষায় সুশিক্ষিত। শিক্ষা যেমন একটি জাতিকে গড়ে তুলতে অনেক ভূমিকা পালন করে ঠিক একই রকম শিক্ষা অর্জন করেও কোন জাতি অধঃপতনের মূল কারণ হতে পারে।
শিক্ষা কী
শিক্ষা হচ্ছে ব্যাক্তি ভেদে আলাদা আলাদা অর্থাৎ আমি আপনাকে বোঝাতে চেয়েছি যে শিক্ষা এমন একটি বিষয় যা একেকজনের কাছে একেক রকম। কেউ শিক্ষা অর্জন করে তার জীবনমান পরিবর্তন করার জন্য, আবার কেউ শিক্ষা অর্জন করে সমাজ পরিবর্তনের জন্য, কেউবা আবার শিক্ষা অর্জন করে লোক দেখানো, আবার কেউ শিক্ষা অর্জন করে অন্যের ক্ষতি করার জন্য।
আমরা যদি শিক্ষা বিষয়ে একটি থিউরিকালি সংজ্ঞা দিতে চাই তাহলে বিষয়টি এরকম দাঁড়াবে যে, কোন ব্যক্তির আচরণগত, জ্ঞান বৃদ্ধি, মেধা বিকাশ, এবং উক্ত বিষয়ে পারদর্শিতা করে তোলার যে প্রক্রিয়া বা মাধ্যম সেটাই হচ্ছে শিক্ষা। আর বর্তমান সময়ে আমরা এই কথা বলতে পারি যে সুশিক্ষা একটি জাতির মেরুদন্ড। পক্ষান্তরে শুধুমাত্র শিক্ষা একটি জাতির জন্য ক্ষতির কারণও হতে পারে।
স্বশিক্ষিত এবং সুশিক্ষিত এর মধ্যে পার্থক্য
চলুন এ পর্যায়ে আমরা স্বশিক্ষা এবং সুশিক্ষার মধ্যে পার্থক্য গুলো পয়েন্ট আকারে জেনে নেই। এ পর্যায়ে দুইটি শিক্ষার সংজ্ঞা গত পার্থক্য তুলে ধরা হচ্ছে-
স্বশিক্ষিত- স্বশিক্ষিত বলতে আমরা যে সকল শিক্ষাকে বুঝি তাহা হচ্ছে, নিজের প্রচেষ্টায় কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াই যে জ্ঞান আহরণ করা হয় তাহাই হচ্ছে স্বশিক্ষা।
সুশিক্ষা- সুশিক্ষা বলতে আমরা যে সকল শিক্ষক বুঝি তা হচ্ছে, যে শিক্ষার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানিকভাবে জ্ঞান আহরণ করে। আর সেই জ্ঞানটি হতে হবে অবশ্যই পজেটিভ অর্থাৎ যেই প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞানের মাধ্যমে একজন ব্যক্তির আচরণগত পরিবর্তন, মেধা বিকাশে পূর্ণ স্বাধীনতা, দক্ষতা অর্জন, এবং তা সৎ কাজে প্রয়োগ। মূলত আমরা এটাকেই সুশিক্ষা হিসাবে বিবেচনা করি।
পক্ষান্তরে আরেকটি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা রয়েছে,, যার ফলে একজন ব্যক্তি আচরণগত পরিবর্তন, মেধা বিকাশ, এবং দক্ষতাই ভরপুর হয়তো বটে তবে সে শিক্ষা সৎ কাজে ব্যবহার না করে অসৎ কাজে ব্যবহার করা হয় সে সকল শিক্ষাকে আমরা স্বশিক্ষা বলতে পারি না যদিও সেটি প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমেই অর্জন করা হয়।
- স্বশিক্ষা অর্জন করতে নিজের আপ্রাণ প্রচেষ্টা থাকার প্রয়োজন পড়ে পক্ষান্তরে সুশিক্ষার জন্য প্রয়োজন পড়ে নিজের আগ্রহ এবং একটি প্রতিষ্ঠান এবং একজন মেন্টরের সহায়তা।
- স্বশিক্ষা অর্জন করতে স্ট্রাগল বেশি করতে হয় তবে এর খরচটি কম পক্ষান্তরে স্বশিক্ষা অর্জন করতে নিজের মানসিকতার প্রয়োজন হয় পাশাপাশি খরচটাও হয় ব্যয়বহুল।
- স্ব-শিক্ষার জন্য কোন প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন হয় না পক্ষান্তরে সুশিক্ষা অর্জনের জন্য প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন হয়।
- স্বশিক্ষার নির্দিষ্ট কোন বয়সের বাধ্যবাধকতা নেই পক্ষান্তরে সুশিক্ষার যেহেতু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তাই এটির একটি বয়সের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে সুশিক্ষা অর্জনের জন্য শুধুমাত্র একাডেমিক ক্ষেত্রে বয়সের বিবেচনা করা হয় তবে ক্ষেত্রবিশেষে স্বশিক্ষা ও বয়স বিবেচনা করে না।
উপসংহার
বর্তমান আমাদের দেশে সুশিক্ষিত লোকের চাইতে শিক্ষিত অভদ্র মানুষের সংখ্যা বেশি। আমরা শিক্ষিত অর্জন করছি কিন্তু কে কতটুকু সু শিক্ষা অর্জন করতে পারছি সেটা বর্তমান সময়ে অনেক অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কারণ আমরা যদি সুশিক্ষিতই হতাম তাহলে দেশে এত দুর্নীতি কেন, কেন একজন শিক্ষিত মানুষের হাতে অপর একজন মানুষ লাঞ্ছিত হয়?
লেখকের কথা
আমাদের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার মান উন্নয়ন করার আপ্রাণ প্রচেষ্টা চলছে। কিন্তু শিক্ষা ব্যবস্থার মান উন্নয়নের পাশাপাশি যদি শুধুমাত্র শিক্ষাব্যবস্থার অনোনয়ন না করে, স্বশিক্ষায় এবং সুশিক্ষায় একজন ব্যক্তি কে সুশিক্ষিত করনের শিক্ষা দেওয়া হতো তাহলে আমার মনে হয় বিষয়টি আরো ভালো হতো। কিন্তু আমরা বিষয়গুলো শুধু শিক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে শিক্ষা দিই, সুশিক্ষিত করতে পারছি না।
পরিশেষে বলতে চাই আমাদের এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনি সহ আপনার পরিচিত জনদেরকে আমাদের এই ওয়েবসাইট বেস্টওয়াল্ড ফলো করুন যাতে করে আমাদের পরবর্তী আর্টিকেলগুলো আপনার নোটিফিকেশনে চলে যায় এবং আপনারা তা স্বাচ্ছন্দ্যে পড়ে নিতে পারেন।
শেষ পর্যন্ত বেস্টওয়াল্ডের সাথে থাকার জন্য আপনাকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ।
Bestwold নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url