খেজুর খাওয়ার উপকারিতা এবং দিনে কয়টি খেজুর খাওয়া উচিত
আসলামুআলাইকুম! সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ, বেস্টওয়াল্ড এর ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। আমরা লক্ষ্য করছি আপনি খেজুর খাওয়ার উপকারিতা এবং দিনে কয়টি খেজুর খাওয়া উচিত এই বিষয়টির উপরে একটি ধারণা নিতে চাচ্ছেন। আমরা আপনাকে এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে উক্ত বিষয় সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা দিয়েছি। এজন্য আপনাকে আমাদের এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে নিতে হবে।
খেজুর একটি অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি ফল। এই ফলটি নিয়মিত খাওয়ার ফলে অনেক দুরারোগ্য রোগব্যাধি হতে পরিত্রাণ পাওয়া যায় এরকমও রেকর্ড রয়েছে। এমন কি বিষ ও যাদু টোনা হতেও পরিত্রাণ পাওয়া যায়। খেজুর বিষয়ে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিভিন্ন উক্তি রয়েছে।
ভূমিকা
খেজুর হচ্ছে ফাইবার জাতীয় একটি ফল, এটি খেতে অনেক সুস্বাদু এবং মিষ্টি প্রকৃতির হয়ে থাকে। খেজুর একটি বিদেশি ফল তবে আমাদের দেশেও বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে এ ফল চাষ করা হচ্ছে। আমাদের দেশীয় যে খেজুর রয়েছে তা হতে উন্নত জাতের খেজুরগুলো দেখতে ও সাদে মানে অনেক পার্থক্য রয়েছে।
প্রথমেই আপনাকে জানিয়ে দিচ্ছি খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর কিছু বানী
হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা হতে একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে যাহা সহীহ মুসলিমের হাদিস নম্বর ৫১৬৮ তে উল্লেখ রয়েছে। তিনি বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন মদিনার উচ্চভূমিতে উৎপন্ন আজওয়া খেজুরের মধ্যে রোগের নিরাময় রয়েছে। আর প্রথম ভরে তা আহার করা বিশেষ প্রতিষেধক।
অন্য এক বর্ণনায় বুখারী হাদিস নম্বর ৫৪৪৫, মুসলিম হাদিস নাম্বার ২০৪৭-১৫৫, আবু দাউদ হাদিস নম্বর ৩৮৭৬ উল্লেখ রয়েছে যে, হযরত সাদ রাজিয়াল্লাহু তা'আলা হতে বর্ণিত তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছেন, যে ব্যক্তি ভরে সাতটি আজোয়া খেজুর খাবে সেদিন কোন বিষ ও যাদুটনা তার ক্ষতি করতে পারবে না।
আরো পড়ুনঃ সজনে পাতার উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম
আবু দাউদ শরীফের আরেকটি বর্ণ নাই ,যা হাদিস নম্বর ৩৮৩৫ উল্লেখ রয়েছে- হযরত সাদ রাঃ বর্ণনা করেন একবার আমি অসুস্থ হলে রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম আমাকে দেখতে আসেন। এ সময় তিনি তার হাত আমার বুকের উপর রাখেন। আমি তার শীতলতা আমার হৃদয়ে অনুভব করি এরপর তিনি বলেন তুমি হৃদরোগে আক্রান্ত।
কাজেই তুমি সাকিফ গোত্রের অধিবাসী হরিসা ইবনে কালদার কাছে যাও, কেননা সে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক। আর সে যেন মদিনার আজওয়া খেজুরের সাতটা খেজুর নিয়ে বিচ্ছিসহ চূর্ণ করে তোমার জন্য তা দিয়ে সাতটি বড়ি তৈরি করে দেই।
প্রতিদিন খেজুর খেলে শরীরের যে পরিবর্তন ঘটে
খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম আয়রন, এবং প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ। তাই এই ফলটি আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখলে বেশ কিছু উপকার আপনি পেয়ে যাবেন। যে সকল উপকার গুলো পাবেন তা নিচে পয়েন্ট আকারে আপনাকে জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি
- প্রতিদিন সকালে সাতটি আজোয়া খেজুর খেলে সেই দিন আপনাকে কোন বিষধর সাপেও দংশন করলে আপনার কোন ক্ষতি হবে না। কারণ খেজুরে রয়েছে এন্টিব্যাকটেরিয়াল যা বিভিন্ন সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।
- খেজুর খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য বুক জ্বালাপোড়া বদহজম থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। কারণ খেজুরে থাকি অ্যামাইনো এসিড ও ফাইভার যা হজমের সাহায্য করে।
খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
প্রতিদিন খেজুর খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়, এর মধ্যে আমরা আপনাকে সাতটি উপকারের কথা এই মুহূর্তে জানিয়ে দিচ্ছি। তাহলে চলুন খেজুর খাওয়ার উপকারিতা গুলো জেনে নিন।
- হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
- স্নায়ুতন্ত্রকে সতেজ রাখে।
- ভিটামিন সমৃদ্ধ একটি ফল।
- কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে।
- আয়রনের অভাব পূরণ করে।
- হাড় ক্ষয় হাত হতে রক্ষা পাওয়া যায় এবং হাড় মজবুত রাখে।
- প্রোটিন সমৃদ্ধ একটি ফল।
দিনে কয়টি খেজুর খাওয়া উচিত
খেজুর একটি ভিটামিন,প্রোটিন ও ফাইভার যুক্ত ফল। এই ফলটি দিনে কতটি খাবেন এর কোন লিমিট নেই। এবং কখন খাবেন তার কোন সময় নির্ধারণ নেই। আপনার যখন ইচ্ছা, যতটুক পারবেন ঠিক ততটুকু খাবেন। তবে হাদিসে বর্ণনা আছে যে কোন ব্যক্তি যদি সকালবেলায় ৭ টি আজওয়া খেজুর খেয়ে থাকে তাহলে ওই দিন তাকে কোন বিষধর বিশ প্রাণনাশ করতে পারবেনা।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবেনা
এ থেকে আমরা একটি সংখ্যা পেয়ে যাই। অপরদিকে এক গবেষণায় জানা গেছে যে একজন ব্যক্তি দিনে ৩০০ গ্রাম পর্যন্ত খেজুর খেতে পারে, এতে করে তার পেটের কোন সমস্যা হবে না। তবে যাদের ডায়াবেটিকস আছে তারা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খেজুর খেতে পারে। বলে রাখা ভালো যে, সাতটি আজয়া খেজুরের ওজন কিন্তু ৩০০ গ্রাম ± হয়ে থাকে।
প্রতিদিন খেজুর খেলে যে সকল রোগ দূরে থাকে
খেজুর এমন একটি ফল বা খাদ্য যা সেবন করলে বা খেলে আপনি নানাবিধ রোগ বালাই হতে পরিত্রাণ পেয়ে যাবেন এবং নানান রোগের প্রতিষেধক হিসেবে বা প্রতিরোধক হিসাবেও কাজ করে। তবে আপনার জেনে রাখা ভালো যে, খেজুর কিন্তু কোন ঔষধ নয় এটি একটি ফল বা খাদ্য মাত্র।
- ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে।
- এনার্জির ঘাটতি দূর করে।
- দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটায়।
- রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে।
- ত্বকের বার্ধক্য প্রতিরোধ করে।
- উচ্চ রক্তচাপ হ্রাস করতে সক্ষম।
- হাড়ের সমস্যা দূর করতে সক্ষম।
উপসংহার
খেজুর একটি নানাবিদ উপকারী ফল, যা আমরা খেয়ে থাকি স্বাচ্ছন্দ ভরে। এটি ছোট বড় বই বৃদ্ধ সর্বস্তরের মানুষের কাছে বেশ একটি জনপ্রিয় ফল। এই ফলটি যেকোনো সময় যেকোনো পরিমাণে খেতে পারে। তবে ডাইবেটিস যাদের আছে তারা একটু সতর্ক থাকবে, তার ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এই ফলটি খাবে।
লেখকের কথা
আপনার খাবার মেনুতে প্রতিদিন কিছু পরিমাণ খেজুর রাখার চেষ্টা করুন যদি সম্ভব হয়। আর আপনি যদি উদ্যোক্তা হয়ে থাকেন তাহলে এই সম্ভাবনাময় ফল, যা বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে অনেকেই চাষ করছে। আপনি যদি মনে করেন এই ফলটা নিয়ে কাজ করবেন তাহলে ট্রাই করতে পারেন।
পরিশেষে বলতে চাই আমাদের এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট বেস্টওয়াল্ড কে ফলো দিয়ে রাখবেন, যাতে করে নিত্য নতুন পোস্ট আপনারা পড়তে পারেন। এবং আপনার পরিচিত জনদের কে ফলো করতে উৎসাহিত করবেন।
শেষ পর্যন্ত বেস্টওয়াল্ড এর সাথে থাকার জন্য আপনাকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ।
Bestwold নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url