খোলাফায়ে রাশেদীন কারা এবং তাদের শাসন আমল
আসসালামু আলাইকুম! সু-প্রিয় পাঠক বিন্দু বেস্টওয়াল্ড ওয়েবসাইডে আপনাকে স্বাগতম। নিশ্চয় আপনি খোলাফায়ে রাশেদীন কারা এবং তাদের শাসন আমল সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। আজ আমরা এই আর্টিকেলটিতে উক্ত বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। আপনি যদি এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ে নেন তাহলে আপনার কাঙ্খিত চাহিদাটি পূরণ হবে ইনশাল্লাহ।
খোলাফায়ে রাশেদীন এমন একটি শাসন ব্যবস্থার নাম যা, মহান আল্লাহ তাআলার বিধি-বিধান এবং মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দেখিয়ে যাওয়া পথ অনুযায়ী অর্থাৎ মহানবীর সুন্নাহ দ্বারা পরিচালিত সার্বভৌমত্ব একমাত্র আল্লার নিমিত্তি পরিচালিত রাষ্ট্র ব্যবস্থা এবং সর্বোচ্চ শাসক মানুষের মর্যাদা।
ভূমিকা
খোলাফায়ে রাশিদিনের অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিবর্গ হচ্ছে তৎকালীন সময়ের বহুল জনপ্রিয় শাসক। এবং এই শাসক নির্দিষ্টকরণ করা হতো ইসলামিক গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে। মুসলমানদের পারস্পরিক পরামর্শ এবং তাদের স্বাধীন মতামত প্রকাশের মাধ্যমে যে সকল ব্যক্তি রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করত বা রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্বভার দেওয়া হতো এমন চারজন ব্যক্তি কে খোলাফায়ে রা সেদিনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
খোলাফায়ে রাশেদীন কারা
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওফাতের পর মুসলমানদের নেতৃত্ব প্রদান করে যে চারজন মোহন নেতা এবং তাদেরকে তৎকালীন সময়ের অর্থাৎ সাহাবীগণ যোগ্যতা ও মুসলমানদের মতামতের ভিত্তিতে ইসলামিক গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে যে সকল নেতৃবৃন্দকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অর্থাৎ রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বভার দেওয়া হয়েছিল তারাই মূলত খোলাফায়ে রাশেদিন।
খোলাফায়ে রাশিদিনের নেতৃবৃন্দ
ইসলামে চারজন ব্যক্তি কে খোলাফায়ে রাশেদিনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়, সকল সাহাবীদের ব্যক্তি স্বাধীনতা ও মতামতের ভিত্তিতে ইসলামিক গণতন্ত্র পদ্ধতিতে পর্যায়ক্রমে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর ওফাতের পর যে চারজন ব্যক্তি কে দায়িত্বভার দেওয়া হয়েছিল এই মুহূর্তে আপনাকে তাদের নাম জানিয়ে দিচ্ছি-
- হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু।
- হযরত ওমর ফারুক রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু।
- হযরত ওসমান গনি রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু।
- সেরে খোদা হযরত আলী রাযিআল্লাহু তা'আলা আনহু।
খোলাফায়ে রাশিদিনের মর্যাদা
মহান আল্লাহ তায়ালা এই পৃথিবীতে অগণিত নবী ও রাসূল প্রেরণ করেছেন, তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী হিসেবে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রেরণ করা হয়েছিল। আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এই পৃথিবীর জমিনে একটি সোনালী অধ্যায়ের সৃষ্টি করে গেছেন এবং রেখে গেছেন তার অনুসারীগণ।
তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম সাহাবীগণ, এবং এই শ্রেষ্ঠ সাহাবীগণদের মধ্যে এমন চারজন সাহাবী ছিলেন যারা খোলাফায়ে রাশীদিনের অন্তর্ভ। বুখারীর এক বর্ণনায় তাদের মর্যাদা সম্পর্কে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে, আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযিআল্লাহু তা'আলা বর্ণনা করেন-রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর জামানায় আমরা লোকদের মধ্যে পরস্পরকে প্রাধান্য দিতাম।
আমরা হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তায়ালাকে সবার উপরে প্রাধান্য দিতাম, তারপর হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহুকে এবং তারপর হযরত ওসমান ইবনে আফফান রাযিআল্লাহু তা'আলা আনহু কে। বুখারীর আরও এক বর্ণনায় হযরত আনাস ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু তা'আলা বর্ণনা করেন-
নবী সাঃ একদা হযরত আবু বকর, হযরত ওমর, হযরত ওসমান সহ উহুদ পাহাড়ে আরোহন করলে পাহাড় তাদের নিয়ে আনন্দে দুলতে থাকে। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন হে উহুদ স্থির থাকো কেননা তোমার উপরে একজন নবী একজন সিদ্দিক ও দুইজন শহীদ আছে।
খোলাফায়ে রাশিদিনের শাসন আমল
খোলাফায়ে রাশিদিনের সময়কাল ছিল সুদীর্ঘ ৩০ বছর। সম্মানিত চার জন ব্যক্তি বা চারজন খলিফা একজন ওফাতের পর আরেকজন পর্যায়ক্রমে সুদীর্ঘ ৩০ বছর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এ পর্যায়ে আমরা আপনাদেরকে জানিয়ে দিচ্ছি কার সময় কাল কতদিন ছিল অর্থাৎ তাদের শাসন আমল কতদিন ছিল-
- হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু (৬৩২-৬৩৪) খ্রিষ্টাব্দ, ১৩ রবিউল আউয়াল ১১ হিজরি হতে ২২ শে জমাদিউল আউয়াল ১৩ হিজরি পর্যন্ত দুই বছর তিন মাস নয় দিন দায়িত্ব পালন করেন।
- হযরত ওমর ফারুক রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু (৬৩৪-৬৪৪) খ্রিষ্টাব্দ, ২৩ শে জমাদিউল আউয়াল ১৩ হিজরী হতে ২৬ শে জিলহজ 23 হিজরী পর্যন্ত ১০ বছর ৬ মাস ৩ দিন দায়িত্ব পালন করেন।
- হযরত ওসমান রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু (৬৪৪-৬৫৬) খ্রিস্টাব্দ, একলা মহরম হিজরী ২৪ হতে ১৮ই জিলহজ ৩৫ হিজরী পর্যন্ত ১১ বছর ১১ মাস ১৭ দিন দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
- হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু (৬৫৬-৬৬১) খ্রিস্টাব্দ, ২৪ শে জিলহজ্জ ৩৫ হিজরী হতে ১৭ই রমজান ৪০ হিজরি পর্যন্ত চার বছর ৮ মাস ২৩ দিন দায়িত্ব পালন করেন।
খোলাফায়ে রাশিদিনের কে কততম খলিফা
- প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাজিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু।
- দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর ফারুক রাযিআল্লাহু তা'আলা আনহু।
- তৃতীয় খলিফা হযরত ওসমান গনি রাযিআল্লাহু তা'আলা আনহু।
- চতুর্থ খলিফা হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু।
উপসংহার
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ওফাতের পর, ইসলামের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য যে সকল ব্যক্তিবর্গ দায়িত্ব পালন করেন এবং আল্লাহর বিধি-বিধান এবং মহানবী সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এর তৈরি কৃত রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করেন যারা তারাই হচ্ছে খোলাফায়ে রাশেদিন।
লেখকের কথা
ইসলামের বেসিক জ্ঞান অর্জন করি, এবং তা বাস্তব জীবনে মেনে চলি।
শেষ কথা এটাই যে আমাদের এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট বেস্টওয়াল্ড ফলো দিয়ে রাখবেন যাতে করে পরবর্তী আর্টিকেলগুলোর নোটিফিকেশন পেয়ে যান, এবং আপনার পরিচিতজনদের ফলো করতে বলুন।
শেষ পর্যন্ত আর্টিকেলটি পড়ার জন্য বেস্টওয়াল্ড এর পক্ষ হতে আপনাকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ
Bestwold নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url