নিম পাতার দশটি ঔষধি গুন
আসলামুআলাইকুম! প্রিয় পাঠক বৃন্দ, আপনাকে আমাদের ওয়েবসাইট বেস্টওয়াল্ডে স্বাগতম। আশা করছি সুস্থ থেকে নিজ কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। এই মুহূর্তে আপনি নিম পাতার দশটি ঔষধি গুন সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আজ আমরা এই আর্টিকালের মাধ্যমে নিম পাতার ঔষধি গুণ সম্পর্কে আলোকপাত করছি। এজন্য আপনাকে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে।
নিম এমন একটি শব্দ যা শুনলেই মনের ভেতর একটি তেতো তেতো ভাবের সৃষ্টি হয়। এবং নিম শব্দটি শুনলেই কেন যেন মনে হয় ঔষধ ঔষধ ঘ্রাণ। নিম আমাদের সকলেরই একটি পরিচিত গাছ। নিমের গাছ, ডাল, পাতা, রস,ফুল সকল কিছুই অত্যান্ত কার্যকরী। সকল রোগের মহা ঔষধ হিসাবে ও নিম গাছের অনেক নাম গাম রয়েছে।
ভূমিকা
নিম পাতার গুনাগুন অনেক, নিম পাতার মাধ্যমে এলার্জির সমস্যা, একজিমা, পড়া, চুলকানি, ত্বকের সমস্যা বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা করা হয়। এমনকি এই নিম পাতার মাধ্যমে রূপচর্চা করা হয়। বোকা লাগে হতেই টুকটাক সমস্যার জন্য নিমপাতা, এবং নিম পাতার রস ব্যবহার হয়ে আসছে, যার অত্যন্ত কার্যকরী ফলাফল পাওয়া যায়।
নিম বা নিম পাতার ব্যবহার
নিম বা নিম পাতার মাধ্যমে নানান ধরনের রোগের প্রতিকার পাওয়া যায়। আজকে আমরা তারই মধ্যে হতে দশটি রোগের প্রতিশোধক হিসেবে নিম পাতার ব্যবহার আপনাকে জানিয়ে দিচ্ছি। চলুন তাহলে এ পর্যায়ে নিম পাতার দশটি ঔষধি গুণ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-
কৃমি রোগের প্রতিকার করে
আপনার যদি কৃমি থেকে থাকে তাহলে কিছু নিমপাতা বেটে তা দিয়ে জুস বানিয়ে খেয়ে নিন এবং নিমের ফুল, কয়েকদিন কন্টিনিউ করেন দেখবেন আপনার সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। এছাড়াও আপনি নিমপাতা সাথে মধু মেশাতে পারেন, তবে মনে রাখবেন কোন ক্রমে মধু ছাড়া অন্য কোন মিষ্টি জাতীয় দ্রব্য মেশানো যাবে না।
আরো পড়ুনঃ সজনে পাতার উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম
ক্ষত সারার কাজ করে
কিছু নিম পাতা পানিতে সিদ্ধ করে উক্ত পানি ঠান্ডা করে আপনার ক্ষতস্থানে লাগিয়ে দিন অথবা ক্ষতস্থানটি ধুয়ে ফেলুন কিছুদিন এভাবে নিম পাতা ব্যবহার করুন ইনশাল্লাহ আপনার ক্ষতস্থান ভালো হতে অনেক হেল্পফুল হবে।
মাথার খুশকি দুর করে
প্রথমে কিছু নিমপাতা সংগ্রহ করুন এরপর নিমপাতার সাথে পরিমান মত পানি যুক্ত করুন এরপর উক্ত পানি সেদ্ধ করুন। পানির কালার পরিবর্তন হয়ে নিলচে রং ধারন করলে উক্ত ফোটানো পানি ঠান্ডা করুন এর পরে আপনি গোসুনের সময় চুলে শ্যাম্পু দেওয়ার পরে উক্ত নিমপাতার রাস বা ফোটানো ঠান্ডা পানি আপনার মাথাই ব্যবহার করুন।
ব্রণ নিরাময়ে কারে
আপনি কিছু নিমপাতা বেটে প্রথমে পেষ্ট তৈরি করুন। তারপর আপনি উক্ত নিমপাতার পেষ্ট আপনার ব্রণে লাগিয়ে রাখুন কিছুক্ষন রেখে ধুয়ে ফেলুল, এভাবে যতদিন আপনার ব্রণ না শুকাচ্ছে ততদিন ভালোভাবে ব্যবহার করুন।
ক্ষুধামান্দ্যা, বমিভাব, ঢেকুর সারাতে নিমের ব্যাবহার
নিমগাছের বেসির ভাগ অংশই তেতো তবে এর ফুল কিন্তু তেতো নয়। এবং নিমের ফুল কিন্ত অত্যান্ত কাজের একটি উপাদান। বিকেল এবং সোন্ধায় বিষেশ করে বর্ষাকালে নিমের ফুল দেখাযায়। আর এই নিমের ফুল ক্ষুধামন্দ্যা, বমি ভাব, ঢেকুর সহ বেশ কিছু রোগের নিরাময় হিসেবে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
দাঁতের মাড়ি ফোলা রোগ
নিমের ডাল এবং বাকল ব্যবহারের ফলে অর্থাৎ নিমের ডাল দিয়ে আপনি নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করার ফলে বহু পুরনো দাঁতের ক্ষতিকর জীবাণুর সঙ্গে লড়াই করে এবং মুখ হতে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া অর্থাৎ ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। আপনার যদি মাড়ি ফোলার রোগ হয় তাহলে উক্ত রোগ সারিয়ে তোলে বিশেষ করে প্রতিকার ও প্রতিরধ হিসেবে বেশ কার্যকরী।
চুলের যত্নে নিমের তেল
নিম একটি বহুমুখী নিরময় উপাদান। তারি ধারাবাহিকতাই নিম হতে প্রাপ্ত বীজ, এই বীজের মাধ্যমে বীজের নির্যাস হতে উৎপন্ন করা যায় মিমের তেল। নিমের তেলের মাধ্যমে তৈরি হয় বিভিন্ন ধরনের কসমেটিক্স এবং রূপচর্চায় ব্যবহারিত বিভিন্ন ধরনের উপাদান। এবং এই নিমের তেলের মাধ্যমে যদি আপনার চুলের যত্ন নেন তাহলে আপনার চুল পড়াসহ চুলের বিভিন্ন ধরনের রোগ হতে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।
এলার্জি দূর করতে নিমের ব্যবহার
আপনার শরীরের যদি এলার্জি ফুটে ওঠে তাহলে নিমপাতা ব্যবহার করতে পারেন। প্রথমে আপনাকে নিম পাতা সংগ্রহ করে তা বেটে অথবা পরিমাণ মত পানিতে ফুটিয়ে উক্তপানি ঠান্ডা করে আপনার শরীরে এলার্জি অনুভূত জায়গাগুলো তে লাগিয়ে নিন অথবা ধুয়ে ফেলুন। এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করুন।
শুষ্ক ত্বকের জন্য নিম পাতার ব্যবহার
শীতকালে কিছু মানুষের ত্বক খসখসে শুষ্ক দেখতে পাওয়া যায় আপনার খসখসে রুখস্য ত্বকে সারাতে এবং তা মসৃণ করতে নিম অথবা নিমপাতা ব্যবহার করতে পারেন। কারণ নিমপাতা একটি কার্যকরী মশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে, যা আপনার শুষ্ক ত্বক মসৃণ করতে বেশ কার্যকর।
আরো পড়ুনঃ শীতে ত্বকের শুষ্কতা দূর করার উপায়
পুড়ে যাওয়া স্থানে নিম পাতার ব্যবহার
আপনার শরীরের কোন জায়গা যদি অস্বাভাবিক ভাবে পুড়ে যায় এবং ক্ষতের সৃষ্টি হয়। তাহলে উক্ত স্থানে কিছু নিম পাতা বেটে পেস্ট তৈরি করে লাগাতে পারেন সাথে সাথে নিমপাতা পর্যাপ্ত পরিমাণ পানিতে ফুটিয়ে নিয়ে তা ঠান্ডা করে আপনার পোড়া স্থানটি ড্রেসিং করতে পারেন এতে করে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আপনার পুড়া স্থানটি স্থায়ীভাবে সেরে যাবে।
ফুসকুড়ি, পচড়া, এবং বহু পুরনো ক্ষত
আপনি কিছু নিমপাতা গুঁড়ো করে অথবা কিছু নিমপাতা পরিমাণ মতো পানিতে সিদ্ধ করে মধু মিশিয়ে চা হিসেবে পান করতে পারেন এতে করে আপনার শরীরে থাকা বিভিন্ন ধরনের ফুসকুড়ি, পচড়া, এবং বহু পুরনো ক্ষত ছাড়তে বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।
উপসংহার
নিম আমাদের সকলেরই খুব পরিচিত একটি গাছ। উপরোক্ত আলোচনা হতে বুঝতে পেরে গেছেন আপনি নিম পাতার অনেক গুনাগুন রয়েছে। নিম পাতা হতে বর্তমান সময় অনেক ধরনের প্রসাধনী তৈরি হচ্ছে এবং বিভিন্ন ধরনের রোগের নিরাময়ক হিসাবেও এই নিম পাতার ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আপনার টুকটাক রোগ গুলো সারাতে জরিবুটি হিসেবে অর্থাৎ আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা হিসাবে নিম পাতার ব্যবহার করতে পারেন।
লেখকের কথা
নিম এবং নিম পাতা,নিমের ফুল ও নিমের তেল একটি বহু পুরানো আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা। যার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের রোগের প্রতিকার ও প্রতিরোধ করা যায়। তাই আমি বলব আপনার টুকটাক যে সকল রোগ পরিলক্ষিত করতে পারেন তা প্রথমে নিমপাতা ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
পরিশেষে বলতে চাই আমাদের আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনিসহ আপনার পরিচিতজনদেরকে আমাদের ওয়েবসাইট বেস্টওয়াল্ড ফলো করে রাখুন এবং রাখতে বলুন যাতে করে আমাদের পরবর্তী আর্টিকেলগুলো আপনার নোটিফিকেশনে চলে যাই।
শেষ পর্যন্ত বেস্টওয়াল্ডের সাথে থাকার জন্য আপনাকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ।
Bestwold নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url