চা পাতায় কোন ভিটামিন থাকে
আসসালামু আলাইকুম! সু-প্রিয় পাঠক বৃন্দ, আশা করছি আল্লাহর রহমতে সুস্থ থেকে নিজ কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। হাজারো ব্যস্ততার ফাঁকি আপনি চা পাতায় কোন ভিটামিন থাকে এই সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আজ আমরা আপনাকে উক্ত বিষয়ে এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে জানাতে চলেছি। এজন্য আপনাকে আমাদের এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ে নিতে হবে।চা পাতার নানাবিধ গুন রয়েছে, হাজারো গুণের মধ্যে কয়েকটি গুণের কথা না বললেই নয়। চা পাতা ব্যবহার করে আমরা দেহের ক্লান্তি দূর করে থাকি। চা পাতা হতে তৈরীকৃত চা অনেকেরই আড্ডার প্রধান বস্তু। এই চা কে ঘিরেই অনেক শব্দ রয়েছে যা আমরা সচরাচর ব্যবহার করে থাকি। যেমন: চা চক্র, চায়ের আড্ডা, চায়ের আস্বাদন ইত্যাদি
পরিশেষে বলতে চাই আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার পরিচিতজনদের মাঝে ছড়িয়ে দিন, যাতে করে তারাও বিষয়গুলো পড়তে পারে।
শেষ পর্যন্ত আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ
ভূমিকা
চা এমন একটি পানীয় যা বিভিন্ন ধরনের রঙের হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ আপনাকে যদি আমি বলি তাহলে লাল চা, রং চা, দুধ চা, গ্রীনচা, ব্ল্যাক চা, ইয়োলো চা ইত্যাদির মত চায়ের অনেক নাম আপনি পেয়ে যাবেন। এছাড়াও ব্যবহারিত চা পাতা অর্থাৎ ফেলে দেওয়া চা পাতা পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করে আমরা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতে পারি। চলুন এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক-চা কি
চা হচ্ছে একটি বিশেষ ধরনের গাছের পাতা, একটি বিশেষ ধরনের গাছের পাতা কে সংগ্রহ করে তা সূর্যের আলো অথবা কৃত্রিম আলোর মাধ্যমে শুকিয়ে তা আবার পানির মাধ্যমে আগুনে অথবা বৈদ্যুতিক ভাবে সিদ্ধ করে তার রস ও কস বের করে উপস্থাপন করা এবং পান করা এর সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াকেই চা বলে।চা এর ধরন বা ফরমেট
চা প্রধানত দুইটি ফরমেটে আমরা পেয়ে থাকি। ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে আমরা সাধারণত যে দুইটি ফর্মে চা পাতা পেয়ে থাকি তা হচ্ছে-আরো পড়ুনঃ আম গাছের পরিচর্যা ও কোন সার ব্যবহার করা ভালো
শুকনো চা: চা গাছ হতে সদ্য তোলা চা পাতাকে রোদে বা আলোয় শুকিয়ে প্রক্রিয়াজাত করণ করার মাধ্যমে আস্ত বা গোটা রেখেই যে চা বাজারে সরবরাহ করা হয় সেটাই হচ্ছে শুকনো চা।
গুড়ো চা: গাছ হতে চা পাতা উত্তোলন করে বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাতকরণ করে চায়ের পাতা গুলোকে পাউডার করে বাজারে সরবরাহ করাটাই হচ্ছে গুড়ো চা।
শুকনো চা: চা গাছ হতে সদ্য তোলা চা পাতাকে রোদে বা আলোয় শুকিয়ে প্রক্রিয়াজাত করণ করার মাধ্যমে আস্ত বা গোটা রেখেই যে চা বাজারে সরবরাহ করা হয় সেটাই হচ্ছে শুকনো চা।
গুড়ো চা: গাছ হতে চা পাতা উত্তোলন করে বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাতকরণ করে চায়ের পাতা গুলোকে পাউডার করে বাজারে সরবরাহ করাটাই হচ্ছে গুড়ো চা।
চায়ের প্রকারভেদ
এই পৃথিবীতে আপনি হাজারো ধরনের চা দেখতে পাবেন বা শুনতে পাবেন তবে আমরা আজকে প্রধানত ছয়টি চা এর কথা আপনাকে জানিয়ে দিচ্ছি, যা বহুল প্রচলিত চা। মানুষ এই চা দেহের ক্লান্তি দূর করার জন্য সাধারণত পান করে থাকে। তবে অনেকে ভাবে এই চা খাওয়াতে অভ্যাসে পরিণত হয়। চলুন প্রচলিত ৬ ধরনের চা এর সাথে পরিচিত হয়।- লাল চা অর্থাৎ রং চা।
- কালো চা অর্থাৎ ব্ল্যাক টি।
- হলুদ চা অর্থাৎ ইয়োলো টি।
- সবুজ চা অর্থাৎ গ্রিন টি।
- পু-এরহ টি।
- ওলং টি।
চা পাতায় কি ভিটামিন রয়েছে
চা পাতায় বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন রয়েছে তার মধ্যে বেশ উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ভিটামিন রয়েছে তা হচ্ছে-ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, শক্তিশালী ভিটামিন সি, এন্টি অক্সাইড, এন্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি এজিং, অ্যান্টি ইনক্লুমেন্টারি ইত্যাদি।চা দিনে কতবার খাওয়া উচিত
এক গবেষণার মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে যে, একজন মানুষের শারীরিক এনার্জি এবং এন্টিঅক্সাইড, এন্টি এজিং সহ বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের জন্য প্রতিদিন এক থেকে দুই কাপ চা খাওয়া উচিত। তবে এই চা অত্যাধিক পান করলে সেটি অ্যান্টি অক্সাইড, এন্টিঅক্সিডেন্ট এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে যায় যার ফলে হতে পারে বিভিন্ন ধরনের সমস্যাও। তাই পরিমিতভাবে চা পান করুন।চুল ও ত্বকের যত্নে চা পাতার ব্যবহার
চা পাতার মাধ্যমে লিকার নামে বা গরম পানিতে দিয়ে যেমন পান করার উপযোগী হিসেবে অর্থাৎ দেহের ক্লান্তি দূর করতে চা পান করা হয় ঠিক তেমনি চা পাতা বহু গুণে গুণান্বিত। এ পর্যায়ে আপনাকে জানিয়ে দিচ্ছি চা পাতার মাধ্যমে চুল ও ত্বকের যত্নের ব্যবহার হিসেবে এর গুরুত্ব।- চোখের ফোলা ভাব দূর করে।
- রোধে পোড়া ত্বকের উপর কালচে আবরণ পড়া দূর করতে চা পাতার জুড়ি নেই।
- সিদ্ধ করা চা পাতার মাধ্যমে মসৃণ ত্বকের সুরক্ষা নেওয়া যায়।
- মুখ পরিষ্কার করতে চা পাতার ব্যবহার অত্যন্ত কার্যকরী।
- চুলের স্বাস্থ্য ধরে রাখতে অর্থাৎ চুল পড়া এবং চুল ভাঙ্গা রোধ করতে ব্যবহারিত চা পাতা সিদ্ধের জরি অত্যন্ত কার্যকর।
- বাড়ির কাঠের আসবাবপত্র সুরক্ষিত রাখতে এই চা পাতার ব্যবহার করা হয়।
ক্ষত সারাতে চা পাতার ব্যবহার
আপনি দৈনন্দিন কাজ করতে গিয়ে যদি আপনার শরীরের কোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে যায় বা হাত ছাড়িয়ে যায় তাহলে আপনি ব্যবহারিত চা পাতা কে সিদ্ধ করে সেই সিদ্ধ করা রসটুকু বের করে কাঁটা স্থানে লাগিয়ে দিলে দ্রুত ক্ষত সেরে যায়। এর কারণ হচ্ছে চা পাতায় রয়েছে এন্টি সেফটিক এর গুণ যা ক্ষত সারাতে অত্যন্ত কার্যকর।জৈব সার হিসেবে ব্যবহারিত চা পাতার গুরুত্ব
বর্তমান সময়ে রাসায়নিক বা কীটনাশকের যে ছড়াছড়ি তাতে উর্বর জমি গুলো ক্রমান্বয়ে তার নব্যতা হারাচ্ছে, জৈব সার ব্যবহার করে উর্বর জমিগুলোকে আরো উর্বর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হবে। আমরা হর হামেশাই চা পাতা ব্যবহার করার পর তা ফেলে দেই। কিন্তু আপনি কি জানেন উক্ত চা পাতাগুলো ফেলে না দিয়ে সংরক্ষিত করে সেটি জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করা যায়।কন্ডিশনার হিসেবে চা পাতার ব্যবহার
আমরা হর হামেশাই বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির কন্ডিশনার শ্যাম্পু ব্যবহার করে থাকি চুলকে সিল্কি ও মসৃণ রাখার জন্য। তবে আপনি জেনে অবাক হবেন যে, এই কন্ডিশনারের গুণাবলী আপনার ব্যবহারকৃত চা পাতা হতেই পাওয়া যায়।আরো পড়ুনঃ জৈব সার ব্যবহারের উপকারিতা জৈব সার ব্যবহারের গুরুত্ব
ব্যবহার করুন আপনার ঘরেই থাকা অব্যবহারিত চা পাতার ফেলে দেওয়া অংশটিকে। চা পাতার ফেলে দেওয়া অংশটিকে পুনরায় গরম পানিতে সিদ্ধ করে উক্ত পানিগুলো তুলে লাগালে চুলের স্বাস্থ্য ঠিক থাকে এবং চুল সিল্কি ও মসৃণ হতে সহায়তা করে।
ব্যবহার করুন আপনার ঘরেই থাকা অব্যবহারিত চা পাতার ফেলে দেওয়া অংশটিকে। চা পাতার ফেলে দেওয়া অংশটিকে পুনরায় গরম পানিতে সিদ্ধ করে উক্ত পানিগুলো তুলে লাগালে চুলের স্বাস্থ্য ঠিক থাকে এবং চুল সিল্কি ও মসৃণ হতে সহায়তা করে।
চা এর বৈশিষ্ট্য
- পানিতে দিলে রং পরিবর্তন হয়।
- স্বাদ এর উপস্থিতি পাওয়া যায়।
- হালকা তেতো অনুভব হয়।
- গন্ধ এর উপস্থিতি অনুভব করা যায়।
- এক ধরনের কস থাকে।
চা কিভাবে তৈরি করতে হয়
বর্তমান সময়ের বিভিন্ন ধরনের যান্ত্রিক মেশিন আবিষ্কৃত হয়েছে যার মাধ্যমে খুব সহজেই চা পাতা ফুটিয়ে চা তৈরি করা যাচ্ছে তবে আগুনে গরম পানির মাধ্যমে চা ছেকে যে সাধিত হয় সেই স্বাদ অন্য কোন মাধ্যমে পাওয়া যায় না। তবে একেক ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করে এক এক ধরনের স্বাদ আস্বাদন করা যায়। চলুন আপনাকে এখন জানিয়ে দেই কিভাবে গরম পানির মাধ্যমে চা তৈরি করা হয়।- প্রথমে আপনাকে একটি জায়গা নির্ধারণ করতে হবে।
- এরপর একটি পাত্র নিতে হবে।
- যে জায়গাটি নির্ধারণ করা হয়েছে সেই জায়গাটিতে আগুন জ্বালাতে হয়।
- আগুনের উপর পাত্রটি রেখে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি নিতে হবে।
- পানি গরম হয়ে গেলে চা পাতাগুলো একটি ছাপনার মাধ্যমে শেখে নিতে হবে।
- প্রয়োজনীয় উপকরণ মিশিয়ে চা পাতা হতে নির্গত রস এর সাথে মিশিয়ে চা উপস্থাপন করতে হয়।
- উপরোক্ত কার্যকুলার সম্পাদন করা মাত্রই আপনি চা খাওয়ার উপযোগী হয়ে যাবেন।
উপসংহার
যা একটি বহুল প্রচলিত পানীয়। যা প্রতিটি এলাকায় সর্বস্তরের জনগণ পান করে থাকে। বিভিন্ন ধরনের আচার অনুষ্ঠানে এর উপস্থিতি পাওয়া যায়। প্রতিটি এলাকার হাট বাজার বা মহল্লায় বিশেষত সকালবেলায় এবং রাত্রিবেলায় এই পানীয় বেশি ব্যবহার করা হয়লেখক এর কথা
চা একটি উপকারী পানীয় যা পান করার মাধ্যমে দেহের ক্লান্তি দূর হয়। চা পাতা হতে বিভিন্ন ধরনের উপকরণ বা উপকার পাওয়া যায়। এবং ব্যবহারিত চা পাতা পুনরায় ব্যবহার করা যায়।পরিশেষে বলতে চাই আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার পরিচিতজনদের মাঝে ছড়িয়ে দিন, যাতে করে তারাও বিষয়গুলো পড়তে পারে।
শেষ পর্যন্ত আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ
Bestwold নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url