বেলি ফ্যাট কমানোর ঘরোয়া উপায়
সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ, আসসালামু আলাইকুম! বেস্টওয়াল্ডের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় বেলি ফ্যাট কমানোর ঘরোয়া উপায়। নিশ্চয়ই আপনি উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে জানার ইচ্ছা প্রকাশ করছেন। উক্ত বিষয়টিতে একটি স্পষ্ট ধারণা পেতে হলে আমাদের এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত আপনাকে পড়ে নিতে হবে।
একটি মানুষকে সুস্থ থাকতে হলে যেমন শরীর ঠিক থাকতে হয়, ঠিক তেমনি একটি মানুষের ফিটনেস থাকার জন্য বেলি ফ্যাট নিয়ন্ত্রনে রাখতে হয়। কারন বেলি ফ্যাট শিরিরের এমুন একটি উপাদান বা অংঙ্গ যা বৃদ্ধি পেলে শরিরে বাসাবাধে নানান ধরনের রোগ বালাই।
ভূমিকা
বেলি ফ্যাট অর্থাৎ ভুড়ি বা পেটে চর্বি জমা। আমরা কেউই চায়না যে আমাদের শরীরে অধিক পরিমাণে চর্বি জমে যাক। তাই আপনার শরীরে যদি চর্বি জমে যায় কিংবা আপনার শরীরে যদি চর্বি জমাতে না চান তাহলে চিকিৎসা ছাড়াই কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করুন, আপনার শরীরকে চর্বি জমা হতে বিরত রাখতে পারবেন এবং শরীরে জমানো চর্বি ছাড়াতে বেশ কার্যকর।
বেলি ফ্যাট কমানোর ঘরোয়া উপায়
আপনার শরীরে জমে থাকা চর্বি সমূহ ছাড়তে এবং আপনার শরীরের চর্বি জমতে না দিতে চাইলে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি রয়েছে তা আপনাকে অনুসরণ করতে হবে। চলুন এ পর্যায়ে দেখে নেওয়া যাক ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো-
পর্যাপ্ত পানি পান করুন
পানি এমন একটি উপাদান,যা আপনার শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ ব্যাধি হতে দূরে রাখতে সক্ষম। তাই যেকোনো রোগ ব্যাধি হতে পরিত্রাণ পেতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।
প্রতিদিন সকালে গরম পানির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন
আপনার শরীরের অতিরিক্ত মেদ বা মুড়ি অর্থাৎ চর্বি কমাতে চান! তাহলে অবশ্যই আপনাকে প্রতিদিন সকালে গরম পানির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে পান করতে হবে। তাহলে আপনার শরীরে জমে থাকা চর্বিগুলো আস্তে আস্তে ঝরে যাবে। তবে এটি কোন মেডিসিন নয় যার ফলে আপনি দ্রুত সমাধান পাবেন। এটি একটি ফুড সাপ্লিমেন্ট যা আপনার কাজ করবে স্থায়ীভাবে এবং ধীরে ধীরে।
জিরা পানি পান করুন
শরীরের মেদ একটি অস্বস্তি কর অবস্থার সৃষ্টি করে। তাই আপনার শরীরে মেদ জমতে না দিতে চাইলে আপনি প্রতিনিয়ত আপনার খাদ্য তালিকার মধ্যে জিরা পানি রাখতে পারেন। এতে করে আপনার শরীরের মেদ জমা থেকে বেঁচে যাবেন।
গ্রিন টি অর্থাৎ সবুজ চা পান করুন
গ্রিন টি এমন একটি ফুড সাপ্লিমেন্ট যা আপনার শরীরে জমে থাকা ফ্যাট অনায়াসে দূর করতে সক্ষম। আপনার শরীরের জমে থাকা মেয়েদের অপসারণ করতে চাইলে আপনি গ্রিন টি পান করতে পারেন।
মধু এবং দারচিনি দিয়ে শরবত তৈরি করে পান করুন
মধু এবং দারুচিনির সংমিশ্রণে তৈরি হয় একটি চমৎকার পানীয়। যা আপনি অত্যন্ত স্বাচ্ছন্দে পান করতে পারবেন। আর এই পানীয়টি পান করার ফলে আপনার শরীরে জমে থাকা চর্বি গলিয়ে দিতে সক্ষম এবং আপনি চাইলে আপনার অনাগত শরীরের চর্বি জমা হতেও এটি ব্যবহার করতে পারেন।
পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম
মানুষের স্বস্তি বা আরামের বা বিশ্রামের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হচ্ছে ঘুম। প্রতিদিন একটি মানুষের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় ঘুমানো উচিত। সর্বনিম্ন ছয় ঘন্টা একটি মানুষের ঘুমানো উচিত। অতিরিক্ত ঘুম যেমন আপনার শরীরের জন্য ক্ষতিকর ঠিক তার বিপরীতে স্বল্প ঘুম এবং অনিয়মিত ঘুম আপনার শরীরের জন্য বিপদজনক। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান এতে মন এবং স্বাস্থ্য উভয় ভালো থাকে।
স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন
আমাদের শরীর ঠিক রাখতে চাইলে আমাদেরকে অবশ্যই স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করতে হবে। আমাদের শরীরে জমার একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে আমরা অনিয়মিতভাবে খাদ্য গ্রহণ করি এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করি। প্রতিনিয়ত আমরা জাঙ্ক ফুড অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করে থাকি। যার ফলে আমাদের শরীরে সৃষ্টি হয় মেদ এর। ভাজা পড়া, ফাস্টফুড অতিরিক্ত গ্রহণ করা হতে বিরত থাকুন।
শরীর চর্চা অর্থাৎ ব্যায়াম করুন
আপনার শরীর ফিট রাখতে চাইলে ব্যায়াম একটি অপরিহার্য বিষয়। প্রতিনিয়ত আপনি যদি শরীর চর্চা করে থাকেন তাহলে আপনার শরীরে জমে থাকা মেদ আস্তে আস্তে অপসারণ হয়ে যাবে।
যে সকল কারণে পেটের চর্বি বৃদ্ধি পায়
আপনার অসতর্কতা এবং অবহেলার কারণে আপনার শরীরের চর্বি জমে যায়, যা দেখতে একেবারেই বাজে দেখায় এবং আপনার শরীরে বাসা বাঁধে নানান ধরনের রোগ ব্যাধি। চলুন এ পর্যায়ে জেনে নেই কি কারণে পেটের চর্বি বৃদ্ধি পায়-
- শারীরিক পরিশ্রম একেবারেই না করলে।
- অস্বাস্থ্যকর খাবার প্রতিনিয়ত খেলে।
- দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকার কারণে পেটের চর্বি জমে।
- অনিয়মিত ঘুমানোর ফলে।
- বয়স বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে।
যে সকল অভ্যাস গড়ে তুললে পেটে জমে থাকা চর্বি ছাড়াতে সহায়তা করে
দ্রুত খাওয়ার অভ্যাস বাদ দিন
খাবার গ্রহণ করার সময় আপনি আপনার খাবারটি সময় নিয়ে ভালোভাবে চিবিয়ে খাবার খান। এতে করে আপনার শরীরের ভারসাম্য বজায় থাকবে। আমরা হর-হামেশাই দ্রুত-তার শহীত খাবার গ্রহণ করে থাকি। যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
নিয়মিত করে খাবার খেয়ে নিন (অর্থাৎ সময়ের খাবার সময়ে খান)
সময়ের খাবার সময় গ্রহণ করুন অর্থাৎ সকালের খাবার সকালে, দুপুরের খাবার দুপুরে, রাত্রের খাবার রাত্রে। এমনটি যেন না হয় যে সকালের খাবার না খেয়ে একেবারে দুপুরের খাবার খেলেন কিংবা দুপুরের খাবার না খেয়ে একেবারে রাত্রে খাবার গ্রহণ করলেন।
আরো পড়ুনঃ কলা খাওয়ার উপকারিতা এরং অপকারিতা
এক্ষেত্রে হয় কি কোন এক বেলা খাবার না খাওয়ার ফলে পরবর্তী সময় আপনি অধিক পরিমাণে খাওয়ার গ্রহণ করে ফেলেন। যার ফলে আপনার সৃষ্টি হয় শরীরের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকার উপাদান।
খাবার খাওয়ার সময় মনোযোগ দিয়ে খাবার খান
আপনি খবর গ্রহণ করার সময় মনোযোগ সহকারে খাবার গ্রহণ করুন। কারন আপনি যদি মনোযোগ সহকারে খাবার গ্রহণ না করেন তাহলে একদিকে যেমন আপনি তৃপ্তি সহকারে খাবার গ্রহণ করা হতে বিরত থাকছেন ঠিক অপরদিকে আপনার শরীরের বিপদ ডেকে আনছেন। তাই যখন খাবার গ্রহণ করবেন মনোযোগ সহকারে খাবার গ্রহণ করুন।
আপনার অস্বাস্থ্যকর ঘুমের অভ্যাস পরিবর্তন করুন
আপনার ঘুমের অভ্যাস অর্থাৎ অনিয়মিত ঘুমের অভ্যাস পরিহার করুন। রাত্রে খুব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ুন এবং খুব সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়ুন। কারণ সকালের আবহাওয়া একটি চমৎকার আবহাওয়া এটি শরীরের জন্য বেশ উপকার।
আরো পড়ুনঃ ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায়ের পাঁচটি টিপস
অর্থাৎ আপনাকে আপনার অনিয়মিত ঘুমটি পরিহার করতে হবে যেমনটি আপনি সাধারণত করে থাকেন যে রাত্রি বারোটা একটা পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের ডিভাইসের সামনে বসে থাকেন এই অভ্যাসটি আপনাকে পরিহার করতে হবে। আপনার প্রয়োজনে আপনি অবশ্যই ডিভাইস ব্যবহার করবেন তবে সেটি অবশ্যই নিয়মতান্ত্রিকভাবে।
অলসতা না করে প্রতিনিয়ত শরীর চর্চা করুন
আমরা অলসতার কারণবশত হোক কিংবা বিভিন্ন ধরনের কাজের চাপে হোক আমরা কিন্তু আমাদের শরীর চর্চা করতে পারিনা। তবে আপনার শরীর ঠিক রাখতে হলে অবশ্যই আপনাকে প্রতিনিয়ত শরীর চর্চা করতে হয়।
এজন্য আপনি যদি মুসলিম হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করুন তাহলে আপনার শারীরিক প্রেমের চাহিদাটি পূরণ হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। এছাড়া অন্য ধর্মলম্বীরা বিভিন্ন ধরনের শরীরচর্চা করতে পারেন। শরীর চর্চার মাধ্যমে আপনার শরীরের মেদ কমিয়ে আনা সম্ভব।
উপসংহার
আপনার শরীরের জমে থাকা মেদ আপনাকে অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলে দেয়। আপনি একটু সতর্কতা অবলম্বন করলেই আপনি আপনার শরীরে জমে থাকা ফ্যাট দূর করতে সক্ষম হবেন। এজন্য আপনাকে উপরে বর্ণিত কার্যগুলো নিয়মতান্ত্রিকভাবে মেনে চলতে হবে। আশা করছি উপরোক্ত কাজগুলো যদি আপনি সঠিকভাবে রপ্ত করতে পারেন তাহলে অবশ্যই ধীরে ধীরে আপনার সমস্যাটি সমাধান হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।
লেখক এর কথা
শরীরের মেদ অবশ্যই একটি অস্বাস্থ্যকর এবং অস্বস্তিকর পরিবেশের সৃষ্টি করে। তবে আপনি চাইলে এর পরিত্রাণ ঘটাতে পারেন। এর জন্য চাই আপনার ইচ্ছা শক্তি এবং প্রতিনিয়ত কিছু কার্য পরিচালনা করা। আশা করছি উপরে বর্ণিত কর্মযজ্ঞগুলো আপনি যথাযথভাবে পালন করলে আপনার শরীরে জমে থাকা মেদ কমাতে আপনি সক্ষম হবেন।
পরিশেষে বলতে চাই আমাদের এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট বেস্টওয়াল্ড কে ফলো করুন এবং আপনার পরিচিত জনদেরকে ফলো করতে উৎসাহিত করুন। যাতে করে আমাদের পরবর্তী আর্টিকেলের নোটিফিকেশন আপনাদের কাছে চলে যাই।
শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকার জন্য বেস্টওয়াল্ড এর পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ।
Bestwold নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url