শীতের জনপ্রিয় চারটি পিঠার নাম ও তৈরি পদ্ধতি
সুপ্রিয় পাঠক বিন্দু, আসসালামুয়ালিকুম! এই শীতকালে আপনাকে জানাই আমাদের ওয়েবসাইট বেস্টওয়াল্ডে স্বাগতম। আশা করছি আল্লাহর রহমতে সুস্থ থেকে নিজ কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। তারই ফাঁকে শীতের জনপ্রিয় চারটি পিঠার নাম ও তৈরি পদ্ধতি সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আমাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা আপনাকে দেওয়া হবে।
পিঠা তো আমরা অনেক সময় করে থাকি, যেমন মনে করেন বিভিন্ন ধরনের উৎসবে। বিশেষ করে নবান্ন উৎসবে, শরৎকালে বানানো হয় তাল পিঠা, বাংলা মাসের প্রথম বৈশাখ মাসে বানানো হয় নানান ধরনের পিঠা। তবে আমাদের গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিশেষ করে শীতকালে কিছু বিশেষ ধরনের পিঠা বানানো হয়ে থাকে, যা আমরাস্বাচ্ছন্দে উপভোগ করি।
ভূমিকা
প্রাচীন কাল হতেই শীতের সময়! গ্রামের মেয়েরা তৈরি করে আসছে বিভিন্ন ধরনের, বিভিন্ন নকশার, কারু-কার্যবিশিষ্ট্য বিভিন্ন স্বাদের, গন্ধের এবং নামের পিঠা পুলি। এবং এই পিঠাপুলি নিয়ে হয় বিভিন্ন ধরনের উৎসব। বর্তমান সময়ে আমরা গ্রামীণ পরিবেশ এর বাইরে ও বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতায় পিঠাপুলি বানানোর পার্টিসিপেট লক্ষ্য করে থাকি।
শীতের জনপ্রিয় ৪ টি পিঠার নাম
আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের পিঠাপুলি দেখে থাকি এবং অনেক সময় তা খেয়েও থাকি। তবে আমাদের বাংলাদেশের মধ্যেই বিভিন্ন অঞ্চল ভেদে বিভিন্ন ধরনের পিঠাপুলির প্রচলন রয়েছে। তার মধ্যে কিছু পিঠা রয়েছে যা সারা দেশব্যাপী ব্যাপক জনপ্রিয় এবং উক্ত পিঠাগুলো সকলেই চিনেন এবং খেও থাকেন এবং পছন্দও করেন বটে। এরই মধ্য হতে আমরা চারটি জনপ্রিয় পিঠার নাম আপনাকে এই মুহূর্তে জানিয়ে দিচ্ছি-
- ভাপা পিঠা (অঞ্চল ভেদে এটি বিভিন্ন ধরনের নাম রয়েছে তবে প্রচলিত নাম ভাপা পিঠা) ধুপি।
- চিতই পিঠা ( রস চিতায়, সাত পিঠা, সহ অঞ্চল ভেদে এটি বিভিন্ন ধরনের নাম রয়েছে )।
- পুলি পিঠা (অঞ্চল ভেদে এটি বিভিন্ন ধরনের নাম রয়েছে )।
- পাটিসাপটা পিঠা (অঞ্চল ভেদে এটি বিভিন্ন ধরনের নাম রয়েছে )।
এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের পিঠা রয়েছে যা শীতকালে অনেক অঞ্চলে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়। আসলে পিতার উৎসবটি মূলত শীতের সময় মানানসই, তবে বছরের প্রায় সময় বিভিন্ন উৎসবে পিঠাপুলির উপস্থিতি দারুন ভাবে লক্ষণীয়।
ভাপা পিঠা
উপকরণঃ এই পিঠা তৈরি করতে আপনাকে যা যা সংগ্রহ করতে হচ্ছে- চাউল, খেজুরের গুড়, নারিকেল, পানি, দুইটি বাটি, দুইটি পরিষ্কার কাপড় এর টুকরো, একটি ঢাকনাযুক্ত উপর ফোটা পাতিল, এবং প্রয়োজনীয় জ্বালানি।
তৈরি পদ্ধতিঃ প্রথমে আপনাকে চাউল গুলো ভালোভাবে ভিজিয়ে নিতে হবে, এরপর চাউল গুলো ভালোভাবে শুকিয়ে নিয়ে সেটি ভাপা পিঠা করার উপযোগী করে পিষে নিতে হবে। পিষানো আটা গুলো একটি বাটির মধ্যে অর্ধেক নিয়ে অর্থাৎ গোটা বাটিটার অর্ধেকে পিষানো আটা গুলো নিতে হবে এরপর খেজুরের গুড় এবং নারকেলের কুচি দিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ কলা খাওয়ার উপকারিতা এরং অপকারিতা
তারপর বাকি অর্ধেক বাটিটি পিষানো আটা দিয়ে পূরণ করে নিতে হবে। এরপর একটি পরিষ্কার কাপড়ের মাধ্যমে বাটিটি পাতিলের উপর রেখে, কিছুক্ষণ রাখলেই আপনি মানসম্মত ভাপা পিঠা পেয়ে যাবেন। উল্লেখ্য বিষয় এই যে বাতিলের ভিতর পানি দিয়ে পানিটিকে গরম করে নিতে হবে।
চিতই পিঠা
উপকরণঃ এই পিঠা তৈরি করতে আপনাকে যে সকল ম্যাটেরিয়ালস সংগ্রহ করতে হচ্ছে তাহলে- চাউলের আটা অর্থাৎ ময়দা, দুধ, গুড় অথবা চিনি, নারিকেল, একটি কাঠ খোলা, পাতিল, জ্বালানি।
তৈরি পদ্ধতিঃ প্রথমে আপনাকে চাউলের আটা গুলো ভালোভাবে পানির সাথে মিলিয়ে নিতে হবে, এরপর মিলানো আটা গুলো একটি কাঠ খোলার মধ্য দিয়ে চিতই পিঠা তৈরি করে নিতে হবে।
এরপর আপনি অন্য একটি পাত্রে পরিমাণ মতো দুধ, নারিকেল, গুড় ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।দুধ, নারিকেল ও গুড় এর ভালোভাবে মিশ্রণ হয়ে গেলে আপনাকে কাঠ খোলায় তোলা চিত্রগুলো উক্ত মিশ্রণের মধ্যে ভিজিয়ে দিতে হবে। এভাবেই তৈরি হয়ে যাবে চিতই পিঠা।
পুলি পিঠা
এটি একটি এমন ধরনের পিঠা যে পিঠাই বিভিন্ন ধরনের শৈল্পিক কারো কাজ তৈরি করা সম্ভব। গ্রামীণ মহিলারা বিশেষ করে এই পিঠারই বিভিন্ন ধরনের শৈল্পিক কারু কাজের মাধ্যমে মনের অতীন গহীন হতে তৈরি করে থাকে এই পিঠা। এই পিঠাটির সাদে এবং গন্ধে বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে যেমন ধরুন টক ঝাল মিষ্টি। সকল কিছুর সমন্বয় করে এই পিঠা তৈরি করা সম্ভব।
উপকরণঃ এই পিঠাটি তৈরি করতে আপনাদের যে সকল উপকরণ সংগ্রহ রাখতে হচ্ছে- এই পিঠাটি এমন একটি পিঠা যাহা বিভিন্ন ধরনের কারুকার্যের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা সম্ভব, এবং এ কাজটি মূলত গ্রামীণ পরিবেশের মহিলারাই করে থাকে। ময়দা, নারিকেল, দুধ, তেল, মসলা, গুড়, চিনি, আলু ভাজি, প্রভৃতি।
তৈরি পদ্ধতিঃ প্রথমে ময়দা গুলোকে পানির সাথে মিশিয়ে নিতে হবে, এরপর মিশানো ময়দাগুলোকে ছোট ছোট আকারে ভাগ করে নিয়ে তা বিভিন্ন ধরনের শৈল্পিক কারুকার্য ঘটিয়ে উক্ত আকারের মধ্যে টক ঝাল মিষ্টি বিভিন্ন ধরনের উপাদান মিশিয়ে তা তেলে ভেজে নিতে হয়। উল্লেখ্য বিষয় এই যে এই পুড়িটির বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে যেমন: ডালপুরি, ভাজিপুরী, হালুয়াপুরী, গোস্তপুরি ইত্যাদি।
পাটিসাপটা পিঠা
উপকরণঃ এই পিঠা তৈরি করতে আপনাকে যা যা সংগ্রহ করতে হচ্ছে তা নিম্নে দেওয়া হলো- চাউলের ময়দা, দুধ, নারকেল, চিনি অথবা গুড়, ডিম, সুজি ইত্যাদি।
তৈরি পদ্ধতিঃ প্রথমে আপনাকে গরম পানি করে ময়দা গুলো ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে, এরপর উক্ত ময়দা গুলো হতে কাঠ খোলায় অথবা প্যানের মাধ্যমে পিঠাগুলো প্রস্তুত করে নিতে হবে। সুজি দিয়ে হালুয়া করে নিতে হবে, ডিম দিতে চাইলে আটার মধ্যে ডিম মিশিয়ে নিতে পারেন।
এভাবে পিঠাগুলো প্রস্তুত করে দুধ এবং গুড়ের মিশ্রণ করে অথবা দুধ এবং চিনির মিশ্রণ করে প্রস্তুতকৃত পিথাগুলো দুধ চিনির মিশ্রণে দিয়ে দিতে হবে এবং তা একটি পাত্রের মধ্যে নিয়ে ভালোভাবে ফুটিয়ে নিতে হবে।
উপসংহার
পিঠার উৎসব মানে শীতকাল! বছরের আমরা প্রায় সময় বিভিন্ন ধরনের পিঠাপুলির আয়োজন করে থাকি। তবে আমাদের বাংলাদেশে এবং আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে শীতের পিঠাকে আমরা বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানে, এবং নবান্ন উৎসবে আমরা পিঠাপুরি করে থাকি।
লেখকের কথা
প্রচলিত কথা আছে যে, মামার বাড়ি মধুর হাড়ি। আমরা গ্রামীন পরিবেশে যারা থাকি বিভিন্ন ধরনের বিভিন্ন সময়ে পিঠাপুলি বানিয়ে থাকি এবং তার স্বাচ্ছন্দে খেয়েও থাকি। তবে বিশেষ করে শীতের সময় এই পিঠাপুলির আয়োজন প্রতিটি ঘরে ঘরেই গ্রাম অঞ্চলে হয়ে থাকে আর এ সকল পিঠাপুলির আয়োজন গুলো গ্রামের মহিলাদের মাধ্যমে বেশি ঘটে থাকে।
পরিশেষে বলে যেতে চাই যে, আমাদের এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনি সহ আপনার পরিচিতজনদেরকে আমাদের ওয়েবসাইট বেস্টওয়াল্ড কে ফলো দিয়ে রাখুন। যাতে করে পরবর্তী আর্টিকেলের নোটিফিকেশন আপনার কাছে চলে যাই।
শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকার জন্য বেস্টওয়াল্ড এর পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ।
Bestwold নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url