কলা খাওয়ার উপকারিতা এরং অপকারিতা
আসসালামু আলাইকুম! সু-প্রিয় পাঠক বৃন্দ, আপনাকে আমাদের ওয়েবসাইট বেস্টওয়াল্ড এ স্বাগতম। অন্য লক্ষ্য করছি এই মুহূর্তে আপনি কলা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আজকে এই আর্টিকালের মাধ্যমে আপনাকে উক্ত বিষয় সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করছি আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ে নেবেন।
কলা এমন একটি খাদ্য উপকরণ যেটিকে আমরা ফল হিসাবেও খেয়ে থাকি, আবার সবজি হিসাবেও খেয়ে থাকি। এই খাদ্য উপকরণটি কাঁচা অবস্থায় আমরা সবজি হিসাবে খাই এবং পেকে গেলে তা আমরা ফল হিসাবে খাই। কলা খাওয়া যেমন শরীরের জন্য বেশ উপকার পক্ষান্তরে তার কিছু অসঙ্গতিও রয়েছে।
ভূমিকা
কলা এমন একটি খাদ্য উপকরণ যা সারাবিশ্বে সমান জনপ্রিয়। আর এটির চাহিদা ও যোগান সারা বছর থাকে। কলাতে রয়েছে নানান ধরনের ভিটামিন ও অ্যান্টি অক্সাইড, যা আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী। শরীর সুস্থতা ও তার ওজন ভারসাম্য বজায় রাখতে কলা বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর এই খাদ্য উপকরণটি প্রতিটি অংশই খাওয়ার উপযোগী যেমন কলার মোছা, কাঞ্জিল, কাঁচা কলা, পাকা কলা, কলা পাতার ব্যবহার, কলা গাছের ব্যবহার প্রতিটি অংশই ব্যবহার উপযোগী।
কলায় কি কি পুষ্টি ও ভিটামিন থাকে
কলায় বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি ও ভিটামিন রয়েছে যা আমাদের মানব শরীরের জন্য বেশি উপকারী। বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধে এর ভূমিকা ব্যাপক আকারে রয়েছে। আর এই খাদ্য উপকরণটি সারা বছরই হাতের নাগালে পাওয়া যায় এবং তা দামেও সস্তা। চলুন এ পর্যায়ে জেনে নেওয়া যাক কলায় কি কি পুষ্টি ও ভিটামিন সমৃদ্ধ।
- কলায় প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে।
- এই খাদ্য উপকরণ হতে এন্টি অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়।
- কলায় রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন ই।
- কলার উপকরণ এর মধ্যে পাওয়া যায় সোডিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ফাইবার।
কলা খাওয়ার উপকারিতা
- কলায় যেহেতু ফাইবার থাকে সেহেতু যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে তারা কলা খেলে তাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা অনেকটা লাঘভ হয়। তবে এক্ষেত্রে পাকা কলা খেতে হবে।
- পাতলা পায়খানা কমাতে কাঁচা কলার ঝুড়ি নেই। আদিকাল হতেই ঘরোয়া ট্রিটমেন্ট হিসেবে পাতলা পায়খানার জন্য কাঁচা কলার ব্যবহার হয়ে আসছে।
- আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কলা রাখতে পারেন, কারণ কলা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। গলায় রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি ও ভিটামিন। যা আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী।
- কলাতে পটাশিয়াম থাকাই আমাদের শরীরের পানির চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। এজন্য অধিকাংশ ক্রীড়াবিদ বা যারা খেলাধুলার সাথে সম্পৃক্ত তাদেরকে বেশি পরিমাণে কলা খেতে দেখা যায়।
- শরীরের রক্তচাপ ও ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ রাখতে কলা খেতে পারেন।
- যে সকল ব্যক্তি ওজন হীনতায় ভুগছেন তারা চাইলে কলা খেতে পারেন। কারণ কলায় রয়েছে অত্যাধিক পরিমাণ ক্যালরি যা আপনার ওজন বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
কলা খাওয়ার অপকারিতা
প্রতিটি জিনিসেরই দুইটি দিক থাকে যার উপকার এর পরিমাণ বেশি তার তো কিছু না কিছু অপকারিতা অবশ্যই থাকবে। ঠিক তারই ধারাবাহিকতাই এই কলার রয়েছে কিছু উপকারিতা তবে সেটি সকলের জন্য প্রযোজ্য নয়, চলুন তাহলে জেনে নেই-
- খুব বেশি পরিমাণে কলা খেলে যাদের ওজন বৃদ্ধির সমস্যায় ভুগছেন তাদের সমস্যা হবে, কারণ ওজন বৃদ্ধি করতে কলা সহায়তা করে তাই যে সকল ব্যক্তি ওজন কমানোর জন্য ট্রাই করছেন সে সকল ব্যক্তি অতিরিক্ত মাত্রায় কলা না খাওয়াই উচিত। কলাই বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের মধ্যে একটি উপাদান হচ্ছে ক্যালরি আর এই ক্যালোরির জন্যই শরীরের ওজন বৃদ্ধি করে।
- যাদের ঠান্ডা লাগার প্রবণতা আছে তারা বিশেষ করে শীতের সময় কলা খাওয়া এড়িয়ে চলাই ভালো। কারণ কলা এমনিতেই ঠান্ডা প্রকৃতির, তাছাড়া যাদের ঠান্ডা লাগার প্রবণতার রয়েছে তারা বেশি পরিমাণে কলা খেলে তাদের আরো ঠান্ডা লাগার প্রবণতা বেড়ে যাবে এজন্য এই ফলটি তাদেরকে এড়িয়ে চলাই ভালো। তাছাড়া শিশুদের ক্ষেত্রে সচেতন থাকতে হবে।
- যে সকল ব্যক্তি দাঁতের সমস্যা জনিত কারণে ভুগছেন তারা অধিক পরিমাণ কলা খাওয়া হতে বিরত থাকবেন। কারণ কলাতে রয়েছে সুগার ও কার্বোহাইড্রেট এর পরিমাণ বেশি, অতএব যারা দাঁতের সমস্যায় ভুগছেন তাদের অধিক পরিমাণ কলা খেলে তাদের দাঁতের সমস্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
- এমন কি যে সকল ব্যক্তি ঘুমের সমস্যা জনিত কারণে ভুগছেন তারাও এই কলা খাওয়া হতে বিরত থাকুন বিশেষ করে রাত্রিবেলায়। কারণ অধিক পরিমাণ কলা খাওয়ার ফলে অনিদ্রার সমস্যা হতে পারে।
কলা সবজি নাকি ফল
এমন একটি খাদ্য উপাদান যা আমরা সবজি হিসাবে ব্যবহার করে থাকি আবার ফল হিসাবে ব্যবহার করে থাকি। তাই আমরা কলাকে সবজিও বলতে পারি আবার ফলো বলতে পারি তবে এক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে আপনি কি হিসাবে খাদ্যদ্রব্য টি খেতে চাচ্ছেন। যদি খাদ্য দ্রব্যটি সবজি হিসাবে খেতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই এটিকে কাঁচা অবস্থায় খেতে হবে।
পক্ষান্তরে আপনি যদি এটিকে ফল হিসাবে খেতে চান তাহলে অবশ্যই এই খাদ্য দ্রব্যটি পাকিয়ে খেতে হবে। তাহলে আমরা এই খাদ্যদ্রব্য টিকে দুইটি ভাবে ব্যবহার করতে পারি। তাই আমরা বলতে পারি এই খাদ্য দ্রব্যটি একদিক থেকে যেমন সবজি অপরদিকে এটি একটি ফল।
কলার কোন কোন অংশ ব্যবহার উপযোগী
কলা এমন একটি খাদ্য উপাদান যার প্রতিটি অংশই খাদ্য উপযোগী এবং ব্যবহার উপযোগী আমরা যদি প্রথম থেকে শুরু করি এবং শেষ পর্যন্ত বলি তাহলে কলার গাছ হতে শুরু করে কলার বীজ পর্যন্ত প্রতিটি অংশই খাদ্য ও ব্যবহার উপযোগী।
- কলা গাছ আমরা প্রয়োজনে ভ্য়ালা বানিয়ে নদীতে -পুকুরে বা খাল-বিলে বিচরণ করতে পারে।
- কলা গাছের পাতা আমরা খাওয়ার প্লেট হিসেবে ব্যবহার করতে পারি।
- কলা গাছের কাঞ্জাল আমরা সুস্বাদু সবজি হিসাবে ব্যবহার করে থাকি অর্থাৎ খেয়ে থাকি।
- কলাগাছের মোচা এটিও আমরা স্বাচ্ছন্দে সবজি হিসাবে খেয়ে থাকি।
- কাচা কলা আমরা সবজি হিসেবে ব্যবহার করে থাকি।
- সর্বশেষ আমরা পাকা কলা ফল হিসেবে খেয়ে থাকি।
- এমনকি পাকা কলায় থাকা বিচি (যদিও সব গলায় থাকে না) বীজ হিসাবে ব্যবহার করে থাকে।
উপসংহার
কলা এমন একটি উপকরণ যা প্রতিটি স্তরে ব্যবহার উপযোগী। এই খাদ্য উপকরণটি যেমন সবজি হিসাবে খেয়ে থাকি পক্ষান্তরে এটি ফল হিসাবেও দারুন জনপ্রিয়। আমাদের শরীরের নানান ধরনের পুষ্টি ও ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করার জন্য আমরা কলার ব্যবহার করে থাকি।
লেখক এর কথা
কলায় অত্যাধিক পরিমাণে পুষ্টি ও ভিটামিন থাকায় আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই আমাদের সকলের উচিত যদি সম্ভব হয় তাহলে প্রতিদিন এই খাদ্য দ্রব্যটি খাদ্য তালিকার মধ্যে রাখা।
পরিশেষে বলতে চাই আমাদের এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনি সহ আপনার পরিচিতজনদেরকে আমাদের ওয়েবসাইট বেস্টওয়াল্ড কে ফলো করে রাখুন। যাতে করে পরবর্তীতে আমাদের কোন আর্টিকেল পাবলিস্ট হওয়া মাত্রই আপনার নোটিফিকেশনে চলে যাই।
শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকার জন্য bestwold এর পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ।
Bestwold নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url