OrdinaryITPostAd

নিপা ভাইরাস কি? নিপা ভাইরাসের লক্ষণ ও চিকিৎসা

আসসালামুয়ালাইকুম! সু-প্রিয় পাঠক বিন্দু, আপনাকে আমাদের ওয়েবসাইট বেস্টওয়াল্ডে স্বাগতম। নিশ্চয়ই আপনি এই মুহূর্তে নিপা ভাইরাস কি? নিপা ভাইরাসের লক্ষণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আজ এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাকে উক্ত বিষয়ে একটি স্পষ্ট ধারণা দিচ্ছি। আশা করছি আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
নিপা ভাইরাস কি? নিপা ভাইরাসের লক্ষণ ও চিকিৎসা

নিপা ভাইরাস কি

নিপা ভাইরাস হচ্ছে একটি ভাইরাস জনিত রোগ। যা বিভিন্ন ধরনের পশু পাখির লালা, মূত্র এর মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। নিপা ভাইরাস সর্বপ্রথম মালয়েশিয়ায় ১৯৯৮ সালে সনাক্ত করা হয়। নিপা ভাইরাস আমাদের বাংলাদেশের সর্বপ্রথম ২০০১ সালে মেহেরপুর জেলাতে প্রথম সনাক্ত করা হয়। বাংলাদেশে বাদুড়ের মাধ্যমে খেজুরের রসে বাদুড়ের লালা সংমিশ্রিত হয়ে শীতকালে এই ভাইরাসটি ছড়ায়।

নিপা ভাইরাসের লক্ষণ

বাংলাদেশে নিপা ভাইরাস ছড়িয়েছে বাদুড়ের মাধ্যমে এটা আমরা জানি। সাধারণত বাংলাদেশের আবহাওয়ায় নভেম্বর থেকে শুরু করে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত সময়টুকু শীতের আবহাওয়া বেশি থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় শীতকালের একটি জনপ্রিয় খাদ্য হিসেবে আমরা খেজুরের রস পান করে থাকি।

আর এই কাঁচা খেজুরের রস পান করার ফলে হয়ে যেতে পারে আমাদের নিপা ভাইরাস। এক গবেষণার মাধ্যমে জানা গেছে যে, বাংলাদেশে ডিসেম্বর থেকে শুরু করে এপ্রিল মাস পর্যন্ত নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার রোগী বেশি শনাক্ত হয়েছে। এ পর্যায়ে নিপা ভাইরাসের লক্ষণ সমূহ জেনে নিই।
  • আক্রান্ত ব্যক্তির তীব্র জর হবে।
  • এ ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি ভুল বকবে।(অর্থাৎ কথা বললে সাধারণভাবে কথা বলবেন)
  • আক্রান্ত ব্যক্তির মাথা যন্ত্রণা হবে।
  • আক্রান্ত ব্যক্তি অজ্ঞান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
  • এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর খিঁচুনি দিয়ে উঠবে থেকে থেকে।
  • আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাসকষ্ট হবে।
  • আক্রান্ত ব্যক্তি মারা যায়।

নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা

নিপা ভাইরাসের কোন নির্দিষ্ট চিকিৎসা বর্তমানে এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। তবে কিছু সহায়ক চিকিৎসা এবং প্রতিরোধের মাধ্যম উত্তম। যেহেতু নিপা ভাইরাসের কোন মেডিসিন এখনো পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি তাই আপনাকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, যাতে করে আপনি এবং আপনার পরিবার নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত না হয়। এজন্য কিছু নিয়ম মেনে চললে আপনি নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হতে বেঁচে যাবেন।

নিপা ভাইরাস রোগ হতে বাঁচার উপায়

যেহেতু এখনো পর্যন্ত নিপা ভাইরাসের কোন ভ্যাকসিন বা মেডিসিন আবিষ্কার হয়নি সেহেতু আপনাকে উক্ত রোগ হতে বেঁচে থাকার জন্য সাধারণ কিছু নিয়ম আপনাকে মেনে চলতেই হবে। চলুন এ পর্যায়ে নিপা ভাইরাসের রোগ হতে বাঁচার উপায় গুলো জেনে নিই।
  • শীতের সময় খেজুরের রসের একটা বিশাল চাহিদা থাকে, আর আমরা জানি খেজুরের রসে বাদুড়ের লালা এবং প্রস্রাবের মাধ্যমে নিপা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে থাকে, এজন্য আমরা এ সময়ে খেজুরের কাচা রস এবং তাড়ি খাওয়া হতে বিরত থাকব বা থাকতে হবে।
  • এমনকি শীতকালে বিভিন্ন ধরনের মুখরচোখ এবং লোভনীয় পিঠা তৈরি হয় যা খেজুরের কাঁচা রসে ডুবিয়ে খাওয়া হয়। আর যেহেতু কাঁচা খেজুরের রসে নিপা ভাইরাস সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে তাই আপনাকে এই কাজটি করা হতে বিরত থাকতে হবে।
  • যেকোনো ধরনের ফল পাখিতে খাওয়া এরকম অর্থাৎ আমি আপনাকে বলতে চাচ্ছি অর্ধ খাওয়া ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • যেকোনো ধরনের ফল ধুয়ে খাওয়ার চেষ্টা করুন।
  • নিপা ভাইরাস সহ বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস রয়েছে যা সাবান ব্যবহারের মাধ্যমে মারা যায়। তাই সব ধরনের কাজের পর সাবান ব্যবহার করা ভালো এতে করে নিপা ভাইরাস সহ বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস আক্রান্ত হতে বেঁচে যাবেন।
  • নিপা ভাইরাস যেহেতু একটি ছোঁয়াচে ও ভাইরাসজনিত রোগ সেহেতু এই রোগটি যেমন বাদুরের লালা এবং প্রস্রাব হতে ছড়ায় তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের পশু পাখির লালা হতেও এ ভাইরাস ছড়ায়। এমনকি সর্বোপরি মানুষের থেকে অপর মানুষের মাঝেও এ ভাইরাস ছড়িয়ে থাকে। তাই আক্রান্ত ব্যক্তিকে আলাদা ভাবে রেখে যতদূর সম্ভব চিকিৎসা করতে হবে।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে শীতকাল শুরু হয় নভেম্বর মাস হতে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত এবং নিপা ভাইরাসের সমূহ সম্ভাবনা থাকে ডিসেম্বর মাস হতে এপ্রিল মাস পর্যন্ত তাই বিশেষ করে শীতের সময় এবং ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত আপনাকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

যেহেতু নিপা ভাইরাসের কোন ভ্যাকসিন বা ঔষধ এখনো পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি তাই একমাত্র আপনার সতর্কতা অবলম্বনে পারে নিপা ভাইরাস হতে আপনাকে পরিত্রান দিতে। এর জন্য শীতে কোনক্রমেই কাঁচা খেজুরের রস পান করা উচিত হবে না। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের অসাধু গাছি রয়েছে যারা খেজুরের রস সংগ্রহ কালে কলস কে না ঢেকে মুক্ত অবস্থায় রাখে।

যার ফলে উক্ত রস খেতে বিভিন্ন ধরনের পশু পাখি আহরিত হয়, এবং উক্ত পশু পাখির মধ্যে যদি নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো পশু পাখি থেকে থাকে তাহলে তার লালা থেকে সংক্রামিত হতে পারে উক্ত রস আর ওই রস টি আপনি পান করলে আপনারও হয়ে যেতে পারে নিপা ভাইরাস। তাই আপনি আপনার সুস্থতার জন্য বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করুন এবং কাচা খেজুরের রস খাওয়া হতে বিরত থাকুন।

পরিশেষে বলতে চাই আমাদের এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনিসহ আপনার পরিচিত জনদেরকে আমাদের ওয়েবসাইট বেস্টওয়াল্ড কে ফলো করে রাখুন যাতে করে পরবর্তী আপডেট এবং নতুন আর্টিকেল এর সন্ধান পেয়ে যান।

শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকার জন্য বেস্টওয়াল্ড এর পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Bestwold নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url