নতুন রেকর্ডে ভূমি মালিকদের করনিয়
সু-প্রিয় পাঠক বিন্দু আসসালামু আলাইকুম! আমাদের ওয়েবসাইট বেস্টওয়াল্ডে ভিজিট করার জন্য আপনাকে স্বাগতম। আপনি নিশ্চয়ই এই মুহূর্তে নতুন রেকর্ডে ভূমি মালিকদের করণীয় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। আমাদের এই আর্টিকালে উক্ত বিষয় সম্পর্কে লেখা হয়েছে। আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে নিলে আপনার প্রশ্নের উত্তর গুলো পেয়ে যাবেন।
নতুন রেকর্ড অর্থাৎ সেটেলমেন্ট সাধারণত ২৫ বছর পর পর একটি অঞ্চলে পরিচালনা করা হয়। পুরাতন মালিকগণের নাম পরিবর্তন করে, উক্ত মালিগণ কর্তৃক সম্পত্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে মালিকানা পরিবর্তন হওয়ায় নতুন মালিকদের নাম অন্তর্ভুক্ত করণের জন্য এবং মৌজা ম্যাপ নতুন ভাবে প্রস্তুত করার জন্য নতুন রেকর্ড অর্থাৎ সেটেলমেন্ট এর কার্যক্রম চালানো হয়।
ভূমিকা
এক রেকর্ড হতে অপর এক রেকর্ড পর্যন্ত! যে সকল মালিকগণের জমি হস্তান্তর এবং রেকর্ডীয় প্রজার মৃত্যুতে তাদের ওয়ারিসগণ নতুন রেকর্ড এ অন্তর্ভুক্ত হতে পারে এর জন্যই সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে জরিপ বিভাগ, একটি সময় পরপর নতুন করে রেকর্ড কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।
নতুন রেকর্ডে ভূমি মালিকদের করণীয়
প্রতিটি ভূমি মালিকের উচিত রেকর্ড চলাকালীন সময়ে জরিপ বিভাগের কর্মকর্তাদেরকে তার সঠিক কাগজপত্র সরবরাহ করা এবং সরজমিনে তার জমিটি নির্দিষ্টকরণ করে দেখিয়ে দেওয়া। যাতে করে জরিপকারী অফিসারের কাজ করতে সুবিধা হয় এবং ভূমি মালিক গন্দেরো সঠিকভাবে ভুমিটি রেকর্ড হয়।
রেকর্ডের পূর্বে ভূমি মালিকদের করণীয়
একটি নতুন ভূমি রেকর্ড চালানোর পূর্বে ভূমি মন্ত্রণালয়ের জরিপ বিভাগ কর্তৃক যে এলাকায় রেকর্ড পরিচালনা করা হবে উক্ত এলাকায় গণবিজ্ঞপ্তি, মাইকিং, প্রজ্ঞাপন জারি ইত্যাদির মাধ্যমে উক্ত ভূমি মালিকদের কে জানানো হয়ে থাকে। রেকর্ড সম্পর্কে জানার পর একজন ভূমি মালিকের উচিত-
- ভূমি সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র অর্থাৎ দলিলাদি ত্রুটিমুক্ত রাখা।
- ওয়ারিশান সম্পত্তি হলে ওয়ারিশান সনদপত্র সংগ্রহে রাখা।
- ওয়ারিশান সম্পত্তি বন্টনযোগ্য হলে বন্টন নামা দলিল রেজিস্ট্রি করে নেওয়া।
- জমিটি ক্রয় বা অন্যান্য সূত্রে পেয়ে থাকলে উক্ত জমিটির নামজারি করে নেওয়া।
- জমিতে কোন ধরনের মামলা থাকলে, মামলা যত দ্রুত সম্ভব নিষ্পত্তি করে নেওয়া।
- জমির সরজমিন ঠিক রাখা, প্রয়োজনে একজন লোকাল সার্ভার দ্বারা জমির সীমানা নির্ধারণ করে নেওয়া।
- সরিকান্দের সাথে সামান্য ভুল বুঝাবুঝির কারণে বিবাদ থাকলে আপোষ মীমাংসা করে নেওয়া।
আপনার জমিটি রেকর্ড চলাকালীন সময়ে যদি আপনার নামে রেকর্ড করতে ব্যর্থ হন তাহলে পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। তাই আপনার উচিত হবে একটি নতুন রেকর্ড চলাকালীন সময়ে আপনার জমিটি আপনার নিজ নামে রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত করুন করা।
রেকর্ডের সময় ভূমি সংক্রান্ত যে সকল কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়
- পূর্ববর্তী রেকর্ড খতিয়ান (যদি আপনার নামে থেকে থাকে)
- ওয়ারিশান সনদপত্র (রেকর্ডিও প্রজা আপনার উর্ধপুরুষ হয়ে থাকলে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে নিম্ন পুরুষ হতে পারে)
- ভূমি উন্নয়ন কর এর দাখিলা সংগ্রহে থাকা।( অবশ্যই সেটি হাল সাল এর খাজনা পরিশোধ হতে হবে)
- জমিটি যদি আপনার ক্রয় কৃত বা অন্যান্য মাধ্যমে প্রাপ্ত হয়ে থাকেন তাহলে কিভাবে পেলেন তার প্রমাণ পত্র হিসেবে উক্ত সম্পত্তির দলিল আপনার কাছে থাকতে হবে।(দলিলটি অবশ্যই সাব রেজিস্ট্রি অফিসের মাধ্যমে রেজিস্ট্রি ভুক্ত হতে হবে)
- ওয়ারিশান সম্পত্তি বন্টনযোগ্য হলে অবশ্যই তার বন্টন নাম্বার দলিল রেজিস্ট্রেশনভুক্ত করে নিতে হবে।
- ক্রয় কৃত বা অন্যান্য মাধ্যমে প্রাপ্ত হলে আপনাকে অবশ্যই উক্ত সম্পত্তির নামজারি করে নিতে হবে।
- একটি সম্পত্তির রেকর্ড চলাকালীন সময়ে সাধারণত উপরোক্ত কাগজগুলো আপনার সংগ্রহে থাকলে আপনার নিজ নামে উক্ত সম্পত্তি টি রেকর্ডভুক্ত করতে পারবেন। এছাড়াও ক্ষেত্রবিশেষে আরো কিছু কাগজপত্র প্রয়োজন হতে পারে যেমন-
- আদিবাসীদের জমি হয়ে থাকলে জেলা প্রশাসক হতে অনুমতি পত্র থাকতে হবে।
- জমিটিতে যদি মামলা হয়ে থাকে তাহলে মামলার রায়ের কাগজ থাকতে হবে।
- আপনার জমিটি যদি ওসিয়াত নামা দলিল হতে প্রাপ্ত হয়ে থাকেন তাহলে যিনি ওসিয়ত করেছেন তার মৃত্যুর সনদ থাকতে হবে।
- আপনার জমিটি যদি ব্যাংককে বা অন্যান্য জায়গাতে মটগেজ দেওয়া থাকে, তাহলে উক্ত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক যথাযথ প্রমাণপত্র থাকতে হবে।
নতুন রেকর্ডের প্রচারণা
একটি নতুন রেকর্ড পরিচালনা করার পূর্বে জরিপ বিভাগ উক্ত এলাকায় ভূমি মালিকদের অবহিতকরণের জন্য প্রচার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে থাকেন। বিজ্ঞপ্তির মাধ্যম বিভিন্ন ধরনের হতে পারে যেমন- মাইকিং করা, গণ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা, খবরের কাগজে প্রকাশ করা, মিডিয়ার মাধ্যমে প্রকাশ করা, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করা, ইউনিয়ন ভূমি অফিস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া ইত্যাদি।
রেকর্ড চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্তর সমূহ
- ট্রেভার্স
- কিস্তোয়ার
- খানাপুরি
- বুঝোরত
- খানাপুরি ও বুজরত
- তসদিক বা এটাস্টেশন
- খসড়া প্রকাশ ও আপত্তি দায়ের অর্থাৎ ডিপি খতিয়ান সরবরাহ করা
- আপত্তির শুনানি
- আপিল শুনানি
- চূড়ান্ত যাচাই
- চূড়ান্ত প্রকাশনা
উপসংহার
আপনার ভুমিটি আপনি নিজেই নিজের নামে করতে উপরোক্ত সকল কাগজ পাতি নিজ দায়িত্বে সকল সময় সংরক্ষণ রাখুন। কারণ যেকোনো সময় চলমান রেকর্ড আপনার কাছে উপস্থিত হতে পারে। তাই উক্ত সময়ে তড়িঘড়ি করে ভুল কাজ করার চেয়ে সময় থাকতে নিজ ভূমির কাগজপত্র সঠিকভাবে ভুল ত্রুটি ঠিক করে নিয়ে বিশুদ্ধভাবে রাখা উচিত।
পরিশেষে বলতে চাই আমাদের এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনিসহ আপনার পরিচিত জনদেরকে আমাদের ওয়েবসাইট বেস্টওয়াল্ড কে ফলো করে রাখুন যাতে করে পরবর্তী আপডেট এবং নতুন আর্টিকেল এর সন্ধান পেয়ে যান।
শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকার জন্য বেস্টওয়াল্ড এর পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ।
Bestwold নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url