OrdinaryITPostAd

যৌথ মূলধনী কোম্পানির প্রধান দলিল কোনটি

আসসালামুআলাইকুম সু-প্রিয় পাঠক বৃন্দ। বেস্টওয়াল্ড এর পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমরা লক্ষ্য করছি যে, আপনি এই মুহূর্তে যৌথ মূলধনী কোম্পানির প্রধান দলিল কোনটি এ সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আমরা আজকে এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে উক্ত বিষয়ে আলোচনা করেছি, আশা করছি শেষ পর্যন্ত পড়লে একটি স্পষ্ট ধারণা পেয়ে যাবেন।
যৌথ মূলধনী কোম্পানির প্রধান দলিল কোনটি
যৌথ মূলধনী ব্যবসা হচ্ছে একটি সংঘবদ্ধ ব্যবসা যা বৃহৎ আকারে প্রতিষ্ঠিত হয়। আমরা জানি বাংলাদেশে সহ পৃথিবীতে বর্তমানে পাঁচ ধরনের ব্যবসা চলমান। উক্ত ব্যবসা গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বৃহৎ ব্যবসার ধরণ হচ্ছে যৌথ মূলধনী ব্যবসা। যৌথ মূলধনী ব্যবসাতে সাধারণ ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে ২০ জন এবং ব্যাংকিং ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ জন নিয়ে গঠিত হতে পারে।

ভূমিকা

আইনের অধীনে গঠিত ও পরিচালিত কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তার অধিকারী এবং সীমিত দায়ী সম্পন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সমূহ কে সাধারণত আমরা যৌথ মূলধনী কোম্পানি হিসাবে জেনে থাকি। যেহেতু যৌথ মূলধনী ব্যবসা গুলো একাধিক মালিকানায় গঠিত হয়ে থাকে তাই উক্ত ব্যবসায় পরিচালনা করার জন্য একটি আইন সৃষ্টিকারী চুক্তি পত্র বা দলিল থাকা অপরিহার্য।

যৌথ মূলধনী কোম্পানি কি

একাধিক মালিক দ্বারা তৈরিকৃত কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তার অধিকারী সীমিত দায় বিশিষ্ট এবং কোম্পানি আইনে সংগঠিত পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয় ও বহু সংখ্যক শেয়ার হোল্ডার বিক্রির মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ করে ব্যবসায় পরিচালিত হয় এবং নির্দিষ্ট একটি দলিল থাকে, সদস্য সংখ্যা বেশি হওয়ায় এবং পর্যাপ্ত শেয়ার বিক্রি করার মাধ্যমে মূলধন বেশি হওয়ায় পরিচালক গন ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগেও স্বাচ্ছন্দ বোধ করে, এমন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে যৌথ মূলধনী কোম্পানি হিসাবে জেনে থাকি।

যৌথ মূলধনী ব্যবসা সাধারণত কি

আমাদের প্রচলিত শব্দ অনুযায়ী যৌথ মূলধনী ব্যবসাকে আমরা কোম্পানি হিসেবে জানি। আর এই কোম্পানিগুলো সাধারণত দুইটি ভাগে বিভক্ত হয়ে থাকে।
  • পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি
  • প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি

কোম্পানি গঠনের বৈশিষ্ট্য সমূহ

যৌথ মূলধনী ব্যবসায় অর্থাৎ কোম্পানি গঠনের কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে এ পর্যায়ে আমরা আপনাকে কোম্পানি গঠনের কিছু বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে অবহিত করে দিচ্ছি-
  • এটি একটি আইন সৃষ্টিকারী প্রতিষ্ঠান হতে হবে।
  • ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানটির অবশ্যই কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তা থাকতে হবে।
  • ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানটি চিরন্তন অস্তিত্ব থাকতে হবে।
  • সদস্য সংখ্যা আইন অনুযায়ী নির্ধারিত।
  • কোম্পানির গঠনে নির্ধারিত চুক্তি সম্পন্ন এবং দলিল থাকতে হবে।
  • শেয়ার বিক্রয়ের মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ করতে হবে।
  • শেয়ার হস্তান্তরের প্রক্রিয়া থাকতে হবে।
  • দায়ী সীমাবদ্ধ থাকবে অর্থাৎ আনলিমিটেড দায় হবে না।
  • বিধিবদ্ধ দায়িত্ব থাকতে হবে।
  • যৌথ মূলধনী ব্যবসাটি অবশ্যই বৃহৎ আকারে হতে হবে যেহেতু এদের সদস্য সংখ্যা বৃহৎ।
  • ব্যবস্থাপনা অবশ্যই স্বতন্ত্র হতে হবে।

যৌথ মূলধনী কোম্পানির প্রধান দলিল কোনটি

যৌথ মূলধনী কোম্পানির প্রধান দলিল হচ্ছে স্মারকলিপি। স্মারকলিপি ছাড়া একটি যৌথ মূলধনী কোম্পানির অস্তিত্ব চিন্তা করা যায় না। কারণ এই স্মারকলিপিতেই স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকে কোম্পানির নাম ঠিকানা উদ্দেশ্য মূলধন দায় ও সম্মতি বিষয়ক নানান ধরনের শর্ত সমূহ। অর্থাৎ আমরা জানি একটি যৌথ মূলধনী কোম্পানির প্রধান এবং একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট হচ্ছে সার্কেলিপি।

স্মারকলিপি কি

স্মারকলিপি হলো কোম্পানির মূল দলিল বা সনদ। একটি কোম্পানির কার্যক্ষেত্র ও ক্ষমতার সীমা নির্দেশ করে, এতে অন্তর্ভুক্ত নেই এমন কোন কাজ কোম্পানি সম্পাদন করতে পারবেনা, করলে তা ক্ষমতা বহির্ভূত কাজ হিসেবে গণ্য হবে।

এছাড়া স্মারকলিপিতে উল্লেখ থাকে, উক্ত কোম্পানি সম্পর্কিত সকল ধরনের তথ্য যেমন: কোম্পানির নাম,ঠিকানা,কোথায় কোথায় শাখা থাকবে,কি নিয়ে কাজ করবে, মূলধন কত হবে, দায় কত হবে, সবকিছু এই স্মারকলিপিতে উল্লেখ থাকে।

স্মারকলিপির বিষয়বস্তু বা ধারা সমূহ

স্মারকলিপি হলো একটি কোম্পানির মূল দলিল বা প্রমাণ পত্র। আইন সৃষ্টি প্রতিষ্ঠান হওয়ায় স্মারকলিপি প্রণয়নে কোম্পানির আইনের অধীনের অনুসরণ করতে হয়। প্রচলিত শেয়ার দ্বারা দায় সীমাবদ্ধ। প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি এবং পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি উভয়েই স্মারকলিপিতে যে সকল বিষয়বস্তু উল্লেখ থাকে তা এই মুহূর্তে আপনাদেরকে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

  • নামধারা- যৌথ মালিকানাধীন কোম্পানির একটি স্পষ্ট নাম থাকতে হবে যা স্মারকলিপি উল্লেখ থাকবে।
  • অবস্থান ও ঠিকানা- স্মারকলিপিতে অবশ্যই যৌথ মালিকানাধীন কোম্পানির স্পষ্টভাবে ঠিকানা উল্লেখ থাকতে হবে এবং উক্ত কোম্পানির কোথায় কোথায় শাখা এবং উপ শাখা থাকবে সেটাও ক্লিয়ার করে স্মারকলিপিতে উল্লেখ করতে হবে।
  • উদ্দেশ্য ধারা- যৌথ মূলধনী কোম্পানিটির উদ্দেশ্য কি হবে তা স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করতে হবে স্মারকলিপিতে।
  • মূলধন ধারা- কোম্পানিটি কি পরিমান মূলধন অনুমোদিত হবে এবং নিবন্ধিত হবে তা স্পষ্টভাবে স্মারকলিপিতে উল্লেখ থাকতে হবে।
  • দায় ধারা- যৌথ মালিকানাধীন কোম্পানির কি পরিমান দায়ী অনুমোদিত তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে যা স্মারকলিপিতে অবস্থান করবে।
  • সম্মতি ধারা- স্মারকলিপির একেবারে শেষের অংশে যৌথ মূলধনী কোম্পানির সৃষ্টিকারী ব্যক্তিগণের মধ্যে মনোনীত একজন ব্যক্তি, একজন সাক্ষীর সামনে কোম্পানি গঠন ও নির্দিষ্ট পরিমাণ শেয়ার ক্রয়ের সম্মতি দিয়ে স্বাক্ষর প্রদান করে যে, স্বীকৃতি প্রদান করা হয় তাই হচ্ছে সম্মতি ধারা।

উপসংহার

যৌথ মূলধনী কোম্পানি একটি বৃহৎ আকারের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান যে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি হলে সর্বনিম্ন দুইজন এবং সর্বোচ্চ ৫০ জন ব্যক্তির মাধ্যমে গঠিত এবং পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন সাতজন এবং ঊর্ধ্বে শেয়ার সংখ্যা দ্বারা বিভাজিত ব্যক্তিবর্গের মাধ্যমে সৃষ্ট বৃহৎ আকারে এবং একটি সংঘবদ্ধ চুক্তি অর্থাৎ স্মারকলিপির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায় হচ্ছে যৌথ মূলধনী ব্যবসা।

পরিশেষে বলতে চাই আমাদের এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনিসহ আপনার পরিচিত জনদেরকে আমাদের ওয়েবসাইট বেস্টওয়াল্ড কে ফলো করে রাখুন যাতে করে পরবর্তী আপডেট এবং নতুন আর্টিকেল এর সন্ধান পেয়ে যান।

শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকার জন্য বেস্টওয়াল্ড এর পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Bestwold নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url